Aeth | দুধ অসহ্য, নাকের উপরে সাদা লাইন ও মুখের চারিধারে নীলচে বর্ণ। |
Aeth | শিশু দুধ পান করার সাথে সাথে জমা জমা দুধ বমি করে, অথবা দুধ কিছুক্ষন পেটে থাকার পর টক গন্ধ যুক্ত চাপ দধির মত বমি হয়। |
Aeth | নাকে সাদা লাইন, মুখের চারিদিকে নীলচে বিবর্ণতা। |
Aeth | সামাজিক কার্যক্রম থেকে নিজেকে দূরে রাখে। |
Aeth | প্রাণীদের প্রতি অত্যধিক ভালোবাসা ও সমবেদনা। |
Aeth | পরীক্ষা ভীতি, মনস্থির করতে ও কোনোকিছু গ্রহণ করতে অক্ষমতা |
গ্রীষ্মকালে উত্তপ্ত আবহাওয়ায় শিশুদের দাঁত ওঠার সময় বিশেষভাবে উপযোগী; যে শিশু দুধ সহ্য করতে পারে না তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
শিশু — অত্যন্ত দুর্বল, দাঁড়াতে পারে না, মাথা তুলে রাখতে পারে না। (এব্রোট); অবসন্নতা সেই সাথে ঘুমঘুম ভাব।
শিশু – চালাকচতুর নয়, চিন্তা করতে পারে না; হতবুদ্ধিভাব।
মুখ — উৎকণ্ঠা ও যন্ত্রণা প্রকাশ পায়, মুখ বাঁকা করে, লিনিয়া নেজালিস (নাকের পাখনার দুপাশে বাঁকা দাগ) কুঁচকে যায়, চেহারায় উৎকণ্ঠা ও বেদনাভাব দেখা দেয়।
নাকের ডগায় হার্পিসের মত উদ্ভেদ।
পিপাসা – একদম থাকে না (এপিস, পালস-আর্সের বিপরীত)। দুধ সহ্য হয় না কোনো ভাবেই দুধ সহ্য করতে পারে না।
দুধ পান করা মাত্রই বড় বড় চাপ চাপ দধির মত বমির আকারে বের হয়ে আসে। শিশু তারপরে অবসন্ন, দুর্বল হয়ে পড়ে, ঘুমঘুমভাব হয় (ম্যাগ-কা তুলনীয়), শিশুর দাঁত ওঠার সময় অজীর্ণতা, বদহজম হঠাৎ দুধের মত সাদা ফেনাযুক্ত অথবা হলদে জলের মত বমি করে ফেলে, তারপর দধির মত অথবা ছানাকাটা দুধ বমি করে।
আহারের পর একঘণ্টা বা তদ্রূপ সময় ভুক্তদ্রব্য উদগীরন করে প্রচুর পরিমাণে সবুজ রঙের বমি করে।
এপিলেপটিক আক্ষেপ- ঐ সময় হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল মুষ্টিবদ্ধ করে, মুখ লালচে হয়, চোখের তারা নিচের দিকে করে ফেলে, চোখের তারা স্থির হয়, চোখের তারা বড় হয়, মুখে ফেনা আসে, দাঁতে দাঁত লাগে—ঐ সময় নাড়ী ছোট; শক্ত ও দ্রুত হয়।
বমির পরে, মলত্যাগের পরে ও আক্ষেপের পরে দুর্বলতা ও অবসন্নতার সাথে ঘুমঘুম ভাব দেখা দেয়।
সম্বন্ধ – এন্টিম-স্ক্রু, আর্স, ক্যাল্ক-কা, স্যানিকি-এর সমগুণ।
বৃদ্ধি – আহার অথবা পান করার পরে; বমনের পরে; মলত্যাগের পরে, আক্ষেপের পরে রোগলক্ষণ বাড়ে।
শক্তি – ৩, ৩০, ২০০।
এই ঔষধের চরিত্রগত লক্ষণগুলি মূলতঃ মস্তিষ্ক ও স্নায়ুমণ্ডলীর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, তৎসহ পাকাশয়িক গোলযোগের সঙ্গে সম্বন্ধ থাকে। মানসিক বা শারীরিক যন্ত্রণা, সর্বদা কাদে, অসুবিধার প্রকাশ প্রভৃতি লক্ষণগুলি এই ঔষধটিকে শিশুদের রোগে বেশি ব্যবহারের উপযুক্ত করেছে, শিশুর দাঁত উঠার সময়, গ্রীষ্মকালীন রোগ প্রভৃতি সহ যখন উদরাময়, দুধ কিছুতেই হজম করতে পারেনা, ও দুর্বল রক্তসঞ্চালণ লক্ষণগুলি বর্তমান থাকে তখন এটি উপযুক্ত। রোগ লক্ষণগুলি প্রথমে মারাত্মকভাবে প্রকাশ পায়।
মন – অস্থির, উদ্বেগ, কাঁদে। ইদুর, বিড়াল কুকুর প্রভৃতি দেখে, অজ্ঞান, প্রলাপ। চিন্তা করতে অক্ষম, মন সন্নিবিষ্ট করতে পারে না। মস্তিষ্কের দুর্বলতা। বোকামো তৎসহ পর্যায়ক্রমে উত্তেজনা এবং খিটখিটে ভাব।
মাথা – মাথা বাঁধা আছে বলে মনে হয়। মাথার পিছনে যন্ত্রণা, যন্ত্রণা মেরুদণ্ড বরাবর নীচের দিকে নামে; শুয়ে থাকলে ও চাপে কমে। মাথার কষ্ট বাতকর্মের পর কম পড়ে (স্যাঙ্গুয়িন) এবং মলত্যাগের দ্বারা মাথার চুলে টেনে রাখার ন্যায় অনুভূতি। মাথাঘোরা তৎসহ ঝিঁমুনি, তৎসহ বুক ধড়ফড়ানি; মাথাঘোরা কমে গেলে, মাথা গরম বলে মনে হয়। এ চোখ – আলোকাতঙ্ক; মেলিবোমিয়ন গ্রন্থির স্ফীতি, ঘুমের সময় চোখের তারা ঘুরতে থাকে। চোখে নিচের দিকে টেনে ধরার ন্যায় অনুভূতি; চোখের তারা বিস্ফারিত।
কান — কানের পথ বাধাপ্রাপ্ত। মনে হয় কানের ভিতর গরম কিছু রয়েছে। কানের ভিতর হিসহিস শব্দ হয়।
নাক – নাক বন্ধ তৎসহ প্রচুর গাঢ় শ্লেষ্মা। নাকের অগ্রভাগ হার্পিসের ন্যায় উদ্ভেদ। বারে বারে হাঁচির নিষ্ফল চেষ্টা।
মুখমণ্ডল — ফোলা, লাল লাল দাগযুক্ত ও শ্রান্ত। মুখের ভাব উদ্বেগজনক, যন্ত্রনাযুক্ত, লিনিয়া ন্যাজানিস স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
মুখবিবর – শুষ্ক। মুখের ভিতর ক্ষত! জিহ্বা অতিরিক্ত লম্বা বলে মনে হয়। গলার ভিতর জ্বালাকর অনুভূতি, তৎসহ ফুসকুড়ি, তৎসহ ঢোক গিলতে কষ্ট হয়।
পাকস্থলী – দুধ সহ্য হয় না; দুধ গেলার সঙ্গে সঙ্গে বমি অথবা কিছু সময় পরে, দুধ চাকা চাকা ভাবে উঠে আসে। বমির পর ক্ষুধার্ত। খাবার এক ঘন্টা পরে ভুক্ত খাদ্যবস্তুও উঠে আসে। সাদা, ফ্যানাযুক্ত প্রচুর বমি। খাবারের দৃশ্যে বমি। পাকস্থলীতে যন্ত্রণাদায়ক সংকোচন। বমি, তৎসহ ঘাম এবং প্রচণ্ড দুর্বলতা এর সঙ্গে মানসিক যন্ত্রণা ও ক্লান্তি থাকে, এর পর শিশু ঘুমিয়ে পড়ে। মনে হয় পাকস্থলীর উপরের অংশ ঘুরে নীচের দিকে নেমেছে। তৎসহ বুক পর্যন্ত জ্বালা। পাকস্থলীতে ছিঁড়ে ফেলার ন্যায় বেদনা, বেদনা অন্ননালী পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
উদর – পেটের বাইরে ও ভিতরে ঠাণ্ডা বোধ, তৎসহ অন্ত্রে কণকণে বেদনা। অন্ত্রশূল, তৎপরে বমি, মাথাঘোরা ও দুর্বলতা। পেট শক্ত, ফাঁপা ও অল্পতেই ব্যথা। নাভির চারিপাশে বুদবুদের ন্যায় অনুভূতি।
মল – পায়খানার পূর্বে অন্ত্রশূল ও কোঁথ, মল পাতলা, সবুজ ও অভূক্ত বস্তু যুক্ত এবং পায়খানার পর ক্লান্তি ও ঝিঁমুনি। শিশুদের কলেরা; শিশুর সর্বাঙ্গ ঠাণ্ডা, চটচটে, নিস্তেজ তৎসহ চোখের তারা স্থির ও বিস্ফারিত। প্রচণ্ড কোষ্ঠকাঠিণ্য; মনে হয় অন্ত্রের কাজ করার সকল ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। বৃদ্ধ বয়েসে কলেরা মত অবস্থা।
প্রস্রাব – প্রস্রাব থলিতে কেটে ফেলার ন্যায় বেদনা, তৎসহ বারে বারে প্রস্রাব করার ইচ্ছা। বৃক্কের বেদনা।
স্ত্রীরোগ – যৌনাঙ্গে কেটে ফেলার ন্যায় তীব্র বেদনা। ফুসকুড়ি, গরমে চুলকানি। ধাতুস্রাব জলের মত। স্তন গ্রন্থির স্ফীতি, তৎসহ কেটে ফেলার ন্যায় তীব্র বেদনা।
শ্বাস-প্রশ্বাস – কষ্টকর, চাপবোধ, উদ্বেগযুক্ত শ্বাস-প্রশ্বাস; আপেক্ষিক সংকোচন। এই লক্ষণগুলির জন্য রোগী বাকশক্তিহীন হয়ে পড়ে।
হৃদপিণ্ড — তীব্র বুক ধড়ফড়ানি, তৎসহ মাথাঘোরা, মাথার যন্ত্রণা ও অস্থিরতা। নারী দ্রুত, কঠিন ও ক্ষুদ্র।
পিঠ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ — দাঁড়াবার জন্য বা মাথা উঁচু করার মত শক্তিও রোগীর থাকে না। পিঠের ভিতর কষে ধরার মত অনুভূতি, পিঠের ক্ষুদ্রস্থানে বেদনা। নিম্নাঙ্গের দুর্বলতা। হাতের আঙ্গুল ও বুড়ো আঙ্গুলগুলি মুষ্টিবদ্ধ। হাত ও পায়ের অবশ ভাব। প্রচণ্ড আক্ষেপ। নিচের দিকে চোখের দৃষ্টি ট্যারা।
চামড়া – হাঁটার সময় ঊরুস্থান হেজে যায়। সহজেই ঘাম হয়। সারা শরীর ঠাণ্ডা এবং চটচটে ঘামযুক্ত। লসিকা গ্রন্থির স্ফীতি। সন্ধিস্থানের চারিপাশে চুলকানি যুক্ত উদ্ভেদ। হাতের চামড়া শুষ্ক ও সঙ্কুচিত। কালশিরা। সারা শরীরে শোথ।
জ্বর – প্রচন্ড উত্তাপ; পিপাসা একেবারেই থাকেনা, প্রচুর, ঠান্ডা ঘাম, ঘামের সময় রোগী গায়ে চাপা অবশ্যই দেবে।
ঘুম — ঘুমের ভিতর প্রচন্ডভাবে রোগী চমকিয়ে উঠে। ফলে রোগীর ঘুমের অসুবিধা হয়; ঠান্ডা ঘাম, বমি বা পায়খানার পর তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব। পায়খানা বা বমির পর শিশু প্রচন্ড ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ে। কমা-বাড়া – বৃদ্ধি ভোর ৩টে থেকে ৪টে, এবং সন্ধ্যায়; গরমে, গ্রীষ্মকালে। লোকজন সঙ্গে ও মুক্ত বাতাসে ভালো থাকে।
তুলনীয় – অ্যাথাম্যানথা মস্তিষ্কের ভ্রান্তি, মাথা ঘোরা শুয়ে থাকলে লালা কম পড়ে, স্বাদ তিতো, হাত ও পা বরফের ন্যায় ঠান্ডা অ্যান্টিমন; ক্যালকেরিয়া; আর্সেনিক; সিকুটা।
অনুপূর্বক – ক্যালকেরিয়া।
শক্তি – ৩য় থেকে ৩০ শক্তি।
(Aethusa-aithusso, to set on fire; in reference to the acrid taste of the juice. cynapium-kuno, a dog.] অপর নাম — ডগ পারর্সলে বা পয়জন (Dog Parslay or Poison),
ফুলস পারসর্লে (Fool’s Parslay)
গার্ডেন হেমলক (Garden Hemlock)
ইথুজা আম্বেলিফেরী জাতীয় উদ্ভিদ। কুসুমিত অবস্থায় এর সমগ্র সরস বৃক্ষ থেকে মূল অরিষ্ট তৈরী হয়।
ইথুজা – একটি আলোচনা
১। ইথুজা শিশুদের বমনের একটি অত্যুকৃষ্ট ঔষধ। দুধ পান করানো মাত্রই উহা প্রবল বেগে উঠে যায় এবং তারপরে শিশু অত্যন্ত অবসন্ন ও তন্দ্রালু হয়ে পড়ে; অথবা যদি দুধ কিছুক্ষণ বেশী সময় পেটে থাকে, তাহলে উহা বড় বড় চাপ চাপ হয়ে উঠে আসে, চাপগুলি এত বড় হয় যে শিশুর পক্ষে ঐগুলি বের করে দেওয়া প্রায় অসম্ভব মনে হয়। যদি পাকস্থলীর এই অবস্থা যথাশীঘ্র আরোগ্য না হয়, তাহলে উহা শিশু কলেরায় পরিণত হয় এবং তখন সবুজ বর্ণের জলের মত অথবা পিচ্ছিল মল নির্গত হতে থাকে, পেটে বেদনা ও আক্ষেপ (convulsions) দেখা দেয়। এই ঔষধের আক্ষেপও স্বতন্ত্র ধরণের; চোখ দুটি উপরের দিকে বা পাশের দিকে ঘোরার পরিবর্তের নীচের দিকে ঘোরে। যদি রোগ আরও বাড়ে, তাহলে মুখমণ্ডল বসে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে লিনিয়া ন্যাসালিস দেখা দেয়।
*(লিনিয়া ন্যাসালিস – উপরের ওষ্ঠের উপরে একটি মুক্তার মত সাদা দাগ, উহা নাকের বাইরের দিকের ছিদ্র থেকে মুখের উভয় কোণ পৰ্য্যন্ত বিস্তৃত সুস্পষ্ট একটি রেখা।)
* শেষোক্ত লক্ষণটি অন্যান্য ঔষধ অপেক্ষা ইথুজারই বিশেষ প্রয়োগ লক্ষণ। ইথুজায় পিপাসা থাকে না। অবসন্নতা ও উৎকণ্ঠা অতি সুস্পষ্ট থাকলেও, পিপাসা থাকলে আর্সেনিকের পরিবর্তে ইথুজাই ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ক্যালকেরিয়া অষ্ট্রিয়ামেও বড় বড় ছানার ডেলার বমন হতে দেখা যায়। কিন্তু তাতে টক গন্ধ মল ও রোগীর মাথায় ঘাম ও বিমুক্ত ব্ৰহ্মরন্ধ্র প্রভৃতি থাকে এবং রোগীর ক্যালকেরিয়ার প্রভৃতি অন্যান্য লক্ষণও দেখতে পাওয়া যায়।
২। ইথুজার আর একটি বিশেষ লক্ষণ আছে, – রোগিণী মনে করে যে, “ঘরের মধ্যে একটি ইঁদুর এপাশ থেকে ওপাশে দৌড়াচ্ছে। অতি পরিশ্রমী মায়বীয়া স্ত্রীলোকদের মধ্যেই এই অদ্ভুত লক্ষণ দেখা যায়। আমার দু’জন রোগিণী ইথুজা সেবনে এইরূপ মানসিক ভ্রান্তি থেকে মুক্তিলাভ করেছে এবং এর দ্বারা তাদের সর্বাঙ্গীন স্বাস্থ্যের উন্নতিও হয়েছে। আমি সৰ্ব্বদাই এই ঔষধের ২০০ শক্তি ব্যবহার করি।