Recent Post

এমোনিয়াম কার্বনিকাম AMMONIUM CARBONICUM [Am-c]

Am-c বুকে ঘড়ঘড়ানি শব্দসহ নিদ্রালুতা, অচৈতন্য ভাব, হাত বাড়িয়ে কিছু ধরতে চায়।
Am-c ঠোট নীল বা বেগুনে বর্ণ, জিহ্বা বাদামী বর্ণ।
Am-c সকালে মুখ ধুয়ার সময় নাক হতে রক্তস্রাব হয়।
Am-c শরীর হতে যে স্রাব বের হয় তা ক্ষতকর, কালচে, তরল ও জমাট বাঁধে না, গ্ল্যান্ডের গ্যাংগ্রীন হওয়ার প্রবণতা।
Am-c যেন হাড় ভেঙ্গে যাবে এরূপ ব্যথা।
Am-c দিনে ভালো ঘুম হয় কিন্তু রাত্রে ভালো ঘুম হয় না, রাত ৩ টার সময় সব রোগের বৃদ্ধি।
Am-c স্যাঁৎস্যাঁতে আবহাওয়ায় শারীরিক ও মানসিক রোগলক্ষণ বৃদ্ধি।

উপযোগিতা – যাদের রক্তস্রাবের প্রবণতা, রক্তে তরলতা, লাল রক্ত কণিকার ভাগ অল্প, ক্ষতে পচন ধরে তাদের পক্ষে উপযোগী । মোটাসোটা, মেদপূর্ণ স্ত্রীলোক—যারা বসে বসে দিন কাটায় তাদের বিভিন্ন অসুখে আবার স্ত্রীলোকেরা যারা কোমলাঙ্গী, হাতের কাজে স্মেলিং সল্টের শিশি রাখেন এবং শীতে, একটুতেই সর্দিতে ভোগেন তাদের ক্ষেত্রে উপযোগী । যে শিশু স্নান করতে চায় না । (এন্টিম-ক্রু; সালফ) যাদের ঘুমালে ‘দমবন্ধ হয়ে আসে, শ্বাস নিতে জেগে উঠতে হয় (গ্রিন্ডেলিয়া, ল্যাকে) তাদের পক্ষে উপযোগী । ঝড় বৃষ্টিতে ভেজা আবহাওয়ায় মেজাজ ভাল থাকে না ।

শিরঃপীড়া — মাথা যেন ভার (পূর্ণতাবোধ) মনে হয় কপাল ফেটে যাবে (বেল, গ্লোনয়িন)।

নাক হতে রক্ত পড়ে—সকালে হাত মুখ ধোওয়ার সময় (আর্নিকা, ম্যাগ-কা); খেলে পড়ে বানাক হতে রক্ত পড়ে ।

ওজিনা (ওজিনা = নাকের বিভিন্ন রোগে নাক হতে দুর্গন্ধযুক্ত পচা স্রাব)। প্রায়ই নাক দিয়ে রক্তাক্ত শ্লেষ্মা বার হয়, সামনে ঝুঁকলে নাকের ডগায় রক্ত আসে ।

রাত্রে প্রায়ই নাক বন্ধ হয়ে থাকে-মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে বাধ্য হয় । ডিপথিরিয়া রোগেও এটা নির্দেশক লক্ষণ। সর্দি দীর্ঘদিনের, শিশুদের সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে যায়। (হিপার, নাক্স, স্যাম্বু, ষ্টিক্টা)।

গলায় ঘা তাতে পচন । টনসিলে গ্যাংগ্রিন হবার প্রবণতা, গ্র্যান্ডগুলিতে রক্তসঞ্চয় ।

ডিপথেরিয়া ও স্কারলেট ফিবারে শিশু ঘুমাতে পারে না কারণ সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে যায় ।

ঋতুস্রাব শুরুর সময় কলেরার মত লক্ষণ দেখা দেয় (বোভিষ্টা, ভিরেট্রাম)।

ঋতুস্রাব – শীঘ্র শীঘ্র, পরিমাণে প্রচুর, স্রাব শুরুর আগে খামচানো শূলব্যথা, স্রাবে হেজে যায়, উরুতে ঘা হয়ে যায়, রাত্রে ও বসে থাকলে স্রাব বাড়ে (জিঙ্কাম), সেইসাথে দাঁতে ব্যথা, পেটে ব্যথা, বিষন্নতা, বিশেষ করে উরুতে ক্লান্তিভাব ও বারে বারে হাই তোলা সেইসাথে শীত শীত বোধ ।

প্রদরস্রাব – জলের মত অথচ জ্বালা করে ও প্রচুর, তাতে ভগোষ্ঠ হেজে যায় ।

শ্বাসকষ্ট সাথে বুক ধড়ফড় করে পরিশ্রমে বা সামান্য দু-এক পা সিড়ি ভাঙ্গলেই বাড়ে, গরম ঘরে বাড়ে ।

এমফাইসিমা রোগের (এমফাইসিমা = ফুসফুসে ব্রঙ্কিয়োলগুলোর আয়তনের অস্বাভাবিক পরিবর্তন—একটা অপরটির সাথে জুড়ে যায় তাতে সঙ্কোচক ক্ষমতা নষ্ট হয়ে ঠিকমত শ্বাস নেওয়া ও ছাড়া সম্ভব হয় না) প্রধান ঔষধ।

কাশি — শুকনো, যেন গলায় ধুলা জমে সুড়সুড় করছে প্রতিদিন ভোরে ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে বাড়ে (কেলি-কা)। আঙুল হাড়া—অস্থিবেষ্টনীর গভীর অংশে ব্যথা (ডায়স্কো, সাইলি) স্কারলেট ফিভারে আক্রান্ত রোগীর মত দেহ রক্তিম (তুলনীয় = এইল্যান্থাস)। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন সাংঘাতিক স্কারলেট ফিভারে শব্দযুক্ত শ্বাসক্রিয়া। জীবনীশক্তির দুর্বলতার জন্য মিলমিলের মত উদ্ভেদ বা উদ্ভেদ সামান্যমাত্র দেখা – দিয়েছে এরূপ অবস্থা ও মস্তিষ্কের পক্ষাঘাত হবার সম্ভাবনা (টিউবার; জিঙ্কাম)।

সম্বন্ধ — রাসটক্স বিষাক্ততা ও পোকামাকড়ের দংশনের প্রতিষেধক ।শরীরের ডানদিক বেশী আক্রান্ত হয় । ল্যাকেসিসের সাথে শত্রুসম্পর্ক ।

বাড়ে — ভেজা ঠান্ডা জলবায়ুতে; ভেজা পুলটিস লাগালে; জলে ধো্য়ার পরে, মেয়েদের ঋতুকালে ।

কমে – উপুড় হয়ে তলপেটে চাপ দিয়ে শুলে (এসেটিক-এসি); বেদনাযুক্ত পাশে চেপে শুলে (পালস্) শুকনো জলবায়ুতে ।

শক্তি – ৬ , ৩০, ২০০।

যে সকল রোগে এই ঔষধটি ব্যবহার হয়ে থাকে তা আমরা প্রায়ই দেখতে পাই শক্তসামর্থ স্ত্রীলোকের মধ্যে, যারা সব সময় ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত, যাদের খুব সহজেই ঠাণ্ডা লাগে, যারা ঋতুস্রাবের পূর্বে কলেরার মত উপসর্গে কষ্ট পায়। যারা অলসভাবে সময় কাটায়, যাদের মধ্যে সব কিছুতেই খুব ধীরে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত হয় এবং যারা প্রায়ই স্মেলিং বটল ব্যবহার করে থাকে। ঋতুস্রাব প্রচুর এবং অতি শীঘ্র শীঘ্র প্রকাশ পায়। শ্লেম্মাঝিল্লী, বিশেষতঃ শ্বাসযন্ত্রের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। মেদযুক্ত রোগী, তৎসহ দুর্বল হৃদপিণ্ড, বুকের ভিতর সাঁইসাঁই শব্দ, দমবন্ধ হওয়ার ন্যায় অনুভূতি। ঠাণ্ডা বাতাস কিছুতেই সহ্য হয় না। জলে বিতৃষ্ণা, কিছুতেই জল স্পর্শ করতে চায়না। ম্যালিগন্যান্ট স্কালেটিনা, তৎসহ ঘুম ঘুম ভাব, গ্রন্থি স্ফীতি, গলায় কালচে-লাল বর্ণের ক্ষত, এবং উদ্ভেদ গুলি ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়। রক্তে ইউরিয়ার আধিক্য। সকল শারীরিক যন্ত্রে ভারী বোধ। শারীরিক দিক থেকে অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন। শরীরের কোন অঙ্গের, গ্রন্থি প্রভৃতির স্ফীতি। স্রাব অম্লযুক্ত। খুব সামান্য বিষয়ে ক্লান্তি ভাব।

মন – সব কিছু সহজেই ভুলে যায়, অভদ্র, জলঝড় যুক্ত আবহাওয়ায় বিষন্ন। অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন। নিজে কথা বললে বা অন্যে কথা বলছে তা শুনলে রোগীর খুবই কষ্ট হয়। দুঃখিত, ক্রন্দনশীল, যুক্তি অনুপস্থিত।

মাথা – দপদপকর মাথার যন্ত্রণা, উপশম, চাপে ও গরম ঘরে।

চোখ – চোখের ভিতর জ্বালা তৎসহ আলো অসহ্য। চোখের ক্লান্তি (ন্যাট মিউর) । ক্ষীন দৃষ্টি। চোখের কোনে টাটানি।

কান – কানে শুনতে কষ্ট হয়। দাঁতে দাঁতে চাপ দিলে কান, চোখ ও নাকে ধাক্কা ।

নাক – নাক থেকে তীক্ষ্ণ, জ্বালাকর জল ঝরে। রাত্রে নাক বন্ধ হয়ে যায়, তৎসহ দীর্ঘকালীন সর্দি। কিছুতেই নাক দিয়ে শ্বাস নিতে পারে না। শিশুদের নাক বন্ধ হওয়া। মুখ ধুলে ও খাবার পর নাক থেকে রক্তস্রাব। নাকে পচা ঘা, নাক থেকে রক্তযুক্ত শ্লেষ্মা। নাকের অগ্রভাগে রক্তাধিক্য।

মুখমণ্ডল – মুখমণ্ডলের চারিপাশে ক্ষত। ঋতুস্রাবের সময় ছোট ফোঁড়া ও পুঁজ যুক্ত উদ্ভেদ। মুখগহ্বরের কিনারাগুলিতে ক্ষত, ফাটা-ফাটা ও জ্বালাকর।

মুখগহ্বর – মুখগহ্বরে ও গলার ভিতর অত্যধিক শুষ্কতা। দাঁতে যন্ত্রণা, দাঁতে দাঁতে ঘষলে মাথায়, চোখে ও কানে ধাক্কা লাগে। জিহ্বাতে রস যুক্ত উদ্ভেদ। অম্ন স্বাদ, ধাতব স্বাদ। চিবানোর সময় চোয়ালে ক্র্যাক্ করে শব্দ হয়।

গলা – টনসিল ও ঘাড়ের গ্রন্থির বিবৃদ্ধি। গলার মধ্য দিয়ে নিচের দিকে জ্বলণ। টনসিলে পচা ঘা তৈরী হবার প্রবণতা যুক্ত। ডিফথিরিয়া, যখন নাক বন্ধ হয়ে যায়।

পাকস্থলী – পাকস্থলীর উপরের অংশে বেদনা, তৎসহ গলা বুক জ্বালা, বমি বমি ভাব, মুখ দিয়ে জল ওঠে ও শীত বোধ। প্রচুর খিদে কিন্তু সামান্যতেই খিদে মিটে যায়। পেটে বায়ু সঞ্চয়জনিত অজীর্ণ।

উদর – পেটের ভিতর শব্দযন্ত্রণা। ফ্র্যাটুলেন্ট হার্নিয়া। মলত্যাগ কষ্টকর, মল শক্ত ও গুটলে গুটলে। রক্তযুক্ত অর্শ, ঋতুস্রাব চলাকালীন সময়ে বৃদ্ধি। গুহ্যদ্বারে চুলকানি, অর্শনলী বাইরে বেরিয়ে আসে, মলত্যাগের পর বৃদ্ধি, শুয়ে থাকলে উপশম।

প্রস্রাব — বারে বারে বেগ, রাত্রে অসাড়ে প্রস্রাব। প্রস্রাব থলিতে কোঁথ। প্রস্রাব সাদা, বালুকনা যুক্ত, রক্তমিশ্রিত, প্রচুর, ঘোলাটে এবং দুর্গন্ধ যুক্ত।

পুরুষের রোগ – অণ্ডকোষ ও রেতো রজ্জুতে চুলকানি ও যন্ত্রণা। কাম ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও পুরুষাঙ্গের উত্থান। বীর্য স্রাব।।

স্ত্রী-রোগ – যৌনাঙ্গের চারিপাশে চুলকানি, ফোলা ও জ্বালা। প্রদরস্রাব জ্বালাকর, হাজাকর ও জলের মত। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি বিতৃষ্ণা। ধাতুস্রাব, শীঘ্র শীঘ্র, প্রচুর, সময়ের আগে, প্রচুর, জমাটবাঁধা, কালচে, শূল্যব্যথার মত বেদনা ও মলশক্ত, মলত্যাগ কষ্টকর, তৎসহ ক্লান্তি বিশেষত উরুস্থানে। হাইতোলা ও শীতবোধ।

শ্বাস-প্রশ্বাস – স্বরভঙ্গ। কাশি প্রতিদিন সকালে ৩টার সময়। তৎসহশ্বাসকষ্ট, হৃদকম্প, বুকের ভিতর জ্বালা, উপরে উঠার সময় বৃদ্ধি। বুক পরিশ্রান্ত বলে মনে হয়। এমফাইসিমা। শ্বাস-প্রশ্বাস নেবার সময় বুকের ভিতর ভারীবোধ, যে কোন প্রকার শারীরিক পরিশ্রমে এবং উষ্ণ ঘরে প্রবেশে বৃদ্ধি অথবা উপরের দিকে মাত্র কয়েক পা উঠলে। অ্যাথেনিক নিউমোনিয়া, ধীরে, কষ্টকর, ঘড়ঘড় শব্দযুক্ত শ্বাস-প্রশ্বাস, শীতকালীন সর্দি তৎসহরক্তের ছিটযুক্ত পিচ্ছিল শ্লেষ্মা। ফুসফুসের শোথ।

হৃদপিণ্ড – হৃদকম্প শোনা যায় তৎসহ ভয়ভাব, ঠাণ্ডা ঘাম, অশ্রস্রাব, কথা বলতে কষ্ট, জোরে জোরে শব্দ করে শ্বাস-প্রশ্বাস ও হাত কাঁপে। হৃদপিণ্ড দুর্বল, কষ্টকর শ্বাসপ্রশ্বাস ও হৃদকম্প সহ নিদ্রভঙ্গ।

অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ – সন্ধিস্থানে ছিঁড়ে যাওয়ার ন্যায় অনুভূতি, বিছানার গরমে উপশম, অঙ্গ প্রসারিত করার প্রবণতা যুক্ত। হাত ঠাণ্ডা ও নীলবর্ণ, শিরাগুলি স্ফীত। যখন বাহু নীচের দিকে ঝুলে থাকে, সেই সময় হাতের আঙ্গুলগুলি ফুলে উঠে। অস্থি আবরকের গভীরে যন্ত্রণা। পায়ের ডিমে ও পায়ের তলায় খিল ধরা। পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে যন্ত্রণা ও ফুলে উঠে। আঙ্গুল হাড়ার শুরুতে কার্যকরী। দাঁড়িয়ে থাকার সময় গোড়ালিতে বেদনা। গোড়ালিতে ও পায়ের পাতার হাড়ে ছিঁড়ে যাওয়ার ন্যায় অনুভূতি, বিছানার গরমে উপশম।

ঘুম – দিনের বেলায় ঘুম ঘুম ভাব। শ্বাস বন্ধ হয়ে ঘুম থেকে চমকিয়ে উঠে।

চামড়া — তীব্র চুলকানি ও জ্বালাকর ফোঙ্কা। স্কার্নেট জ্বরের উদ্ভেদ। ঘামাচির মত উদ্ভেদ। ম্যালিগন্যান্ট স্কার্লোটিনা। জীবনীশক্তির দুর্বলতার জন্য উদ্ভেদ ধীরে প্রকাশ পায়। বৃদ্ধদের বিসর্গ, তৎসহ মস্তিষ্কের লক্ষণ বর্তমান থাকে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ভঁজের ভিতর, কুঁচকিস্থানে, গুহ্যদ্বারের চারি পাশে ও যৌনাঙ্গে একজিমা।

কমা-বাড়া  – বৃদ্ধি, সন্ধ্যায়, ঠাণ্ডা, ভিজে আবহাওয়ায়, ভিজা জিনিষ লাগালে, মুখ ধুলে, ও সকালে ৩ থেকে ৪ টার মধ্যে, ঋতুস্রাব চলাকালীন সময়ে।

উপশম – যন্ত্রনার দিক ও পাকস্থলীর উপর চাপ দিয়ে শুলে, শুষ্ক আবহাওয়ায়।

সম্বন্ধ – ল্যাকেসিসের প্রতি শুক্রভাবাপন্ন। কাজের দিক থেকে দুটি ঔষধই সদৃশ।

দোষঘ্ন – আর্নিকা, ক্যাম্ফর।

তুলনীয় – রাস, মিউরিয়েটিক অ্যাসিড, টাটার, এমেট। কাঠকয়লার ধোঁয়ার বিষক্রিয়ায় ব্যবহার হয়ে থাকে।

শক্তি – বেশি দিন রাখা হলে এই ঔষধটির নিম্নশক্তি খারাপ হয়ে যায়। ৬ষ্ঠ শক্তি সাধারণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ।

যদি আমরা পুরাতন পদ্ধতি (এলোপ্যাথি) অনুসারে চিকিৎসা করিতাম এবং লক্ষ্য করিতাম যে, এমন কাৰ্বের কয়েকটি বিশেষ প্রস্তুতি কিরূপ আশ্চৰ্য্যভাবে উঠিয়া যায়, তাহা হইলে আমরা উহাকে মাত্র মূর্চ্ছা ও অন্য কয়েকটি সামান্য সামান্য রোগে উপশমকর ঔষধরূপে ব্যবহার করিতে পারিতাম এবং উহার জলীয় দ্রবকে বৃদ্ধা-কুমারী ও অপর কতকগুলি স্ত্রীলোককে সান্ত্বনা দিবার জন্য ব্যবহার করিতে পারিতাম। কিন্তু এমন কাৰ্ব্ব একটি দীর্ঘক্রিয়, ধাতুদোষ-সংশোধক ও সোরা দোষ নাশক ঔষধ। ইহা রক্তের দ্রুত পরিবর্তন জন্মায়, ইহা সমুদয় শারীরবিধানকে বিচলিত করে; এবং ইহা স্কার্ভিরোগ সদৃশ ধাতুর সৃষ্টি করে। ইহা স্রাবগুলি সবই অম্লাত্মক। ইহার লালা অম্লাত্মক হয় এবং ওষ্ঠ দুইটিকে হাজাইয়া দেয়, সুতরাং উহারা মধ্যস্থলে এবং কোনে ফাটিয়া যায় এবং ক্ষতযুক্ত, শুষ্ক ও মামড়ীবিশিষ্ট হয়। চক্ষুর ক্ষতকর স্রাবে চক্ষুর পাতা ক্ষতযুক্ত শুষ্ক এবং ফাটাফাটা হইয়া পড়ে। ইহার মলও অম্লাত্মক এবং হাজাইয়া দেয়। বিদাহী ঋতুস্রাব এবং প্রদরস্রাব হইতে স্ত্রী জননেন্দ্রিয় হাজাবিশিষ্ট ও ক্ষতযুক্ত হয় এবং চর্মের উপর যেখানেই ক্ষত থাকে, তাহা হইতে ক্ষরিত রস চারিপার্শ্বের চর্মকে হাজাইয়া তুলে।

এই ঔষধে কালবর্ণের রক্তস্রাব আছে; প্রায়ই রক্তটি তরল, কিন্তু উহা জমে না; রক্তস্রাব হয়-নাসিকা, জরায়ু, মূত্রাশয় এবং অন্ত্রাদি হইতে। রক্তের বর্ণ কাল, উহা হইতে বুঝা যায় যে, রক্তসঞ্চালনের যথেষ্ট বিশৃঙখল ঘটিয়াছে। চৰ্ম্ম নানারূপ দাগবিশিষ্ট ও বিবর্ণ হইয়া পড়ে।

ইহা হৃৎপিন্ডের উপর প্রবল ক্রিয়া প্রকাশ করে, দূর হইতে শুনা যায়,–এরূপ হৃৎস্পন্দন উপস্থিত হয় এবং প্রত্যেক সঞ্চালনেই হৃৎস্পন্দনের বৃদ্ধি হয়। ইহার সহিত সংযুক্ত থাকে প্রবল অবসন্নতা। ইহা একটি অদ্ভুত সঘটন যে, প্রাচীনেরাও জানিতেন, হৃৎরোগ সংক্রান্ত শ্বাসকষ্ট এমন কাৰ্ব দ্বারা প্রশমিত হয় এবং সেইজন্য আজকালও এমোনিয়া দ্ৰবক উল্লিখিত লক্ষণসমূহের অনুরূপ লক্ষণে ব্যবহৃত হইয়া থাকে। তাঁহারা ইহাকে উত্তেজক ঔষধরূপে ব্যবহার করেন, কিন্তু লক্ষণসাদৃশ্য থাকিলে ইহার একটিমাত্র মাত্রাই যথেষ্ট। প্রাচীনেরা আরও জানিতেন যে, দুষ্ট প্রকৃতির নিউমোনিয়া রোগের বর্ধিত অবস্থায় রোগ বাঁকিবার মুখে এমোনিয়া দ্রবক ব্যবহার করিতে হয় এবং এইরূপ ব্যবহার একটি পুরাতন এলোপ্যাথিক নীতি, কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে এরূপ অবস্থায় ইহার হোমিওপ্যাথিক লক্ষণসাদৃশ্য থাকে। নিউমোনিয়া রোগের শেষে হৃৎপিন্ডের ক্রিয়া স্থগিত হওয়ার সম্ভাবনাযুক্ত ভয়াবহ অবসন্নতায়, একবার হয়ত তাহারা একটি রোগীকে ইহা দ্বারা আরোগ্য এবং যেহেতু তাঁহারা এরূপ একটি রোগীকে উপশম দিতে পারিয়াছিলেন, সেইজন্য, তখন, ভবিষ্যতের সকল রোগীর জন্যই ইহাকে ঔষধ বলিয়া গ্রহণ করা হইয়াছিল।

এমোনিয়াম কাৰ্ব্বে রক্তবিষাক্ততা সদৃশ লক্ষণ আছে, যেমনটি আমরা দেখিতে পাই অত্যন্ত অবসন্নতা এবং হৃৎপিন্ডটি যেন ঠেলিয়া বাহির হইতেছে—এরূপ শ্বাসকৃতাযুক্ত বিসর্প ও সাঙ্ঘাতিক প্রকৃতির আরক্ত জ্বরে। চর্মের উপর এক প্রকার তালি তালি বর্ণালি থাকে, কারণ। রক্তবহা নাড়ীগুলির পক্ষাঘাতবৎ অবস্থা জন্মে, সন্ধিগুলি ফুলিয়া উঠে এবং মুখমন্ডল কৃষ্ণাভ ও ফুলা ফুলা হয়। এমন কাৰ্ব্ব ঠিক এইরূপ অবস্থায় বহু শতাব্দী ধরিয়া এলোপ্যাথিক মতে ব্যবহৃত হইয়া আসিতেছে এবং ইহা, ইহার উপযোগিতা দ্বারা, ইহার হোমিওপ্যাথিক সম্বন্ধ সপ্রমাণ করিয়াছে।

ইহা সাধারণ দুর্বলতা, দুর্বল হৃৎপিন্ড ও শীর্ণতায় উপযোগী। রোগীর কোন বিশেষ নির্দেশক লক্ষণ থাকে না এবং কোন ঔষধেই প্রতিক্রিয়া জাগে না। রোগী বুক ধড়ফড়ানি এবং নড়িলে চড়িলেই শ্বাসকৃচ্ছ্রের জন্য বিছানায় শুইয়া থাকে। ইহা সম্পূর্ণভাবে দুর্বলতার ব্যাপার। এইরূপ একটি রোগী দেড় বৎসর ধরিয়া আমাকে বেশ আমোদ দিয়াছিল। এই সহরের (চিকাগো) একজন মহিলার অবস্থা ঠিক পূর্বোক্ত বর্ণনার অনুরূপ ছিল। তাহার রোগ ছিল হৃৎপিন্ড সংক্রান্ত একপ্রকার অদ্ভুত দুৰ্বলতা, তৎসহ শ্বাসকৃচ্ছ্রতা এবং নড়িলে চড়িলেই বুক ধড়ফড়ানি। আমি তাঁহাকে চিকিৎসা করিতেছিলাম, কিন্তু তাঁহাকে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করি নাই। আমার চিকিৎসায় তাহার উপকার না হওয়ায়, আমার হাত হইতে ছাড়াইয়া লইয়া একজন শ্রেষ্ঠ স্নায়ুতত্ত্ববিদের নিকট লইয়া যাওয়া হয়। তিনি তাহার উপর “বিশ্রামের দ্বারা উপশম” নীতি প্রয়োগ করিলেন এবং বলিলেন, ছয় সপ্তাহ মধ্যেই তিনি আরোগ্য হইবেন। কিন্তু ছয় সপ্তাহের শেষে তাঁহার রোগ আরও বাড়িয়া উঠিল এবং একজন হৃৎরোগ বিশেষজ্ঞকে আনা হইল। তিনি বলিলেন যে, তাঁহার হৃৎপিন্ড যে সবল নহে একথা সত্য, কিন্তু তাঁহার কোন যান্ত্রিক রোগ নাই, সুতরাং রোগিণী তাঁহার চিকিৎসা বিভাগের অন্তর্ভুক্তও নহেন। তারপর একজন ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞকে আনা হইল এবং ক্রমে তিনি সর্বপ্রকার বিশেষজ্ঞগণের দ্বারাই পরীক্ষিত হইলেন। তাঁহার সকল দৈহিক যন্ত্রগুলি সম্পূর্ণভাবে পরীক্ষা করা হইয়াছিল এবং জানা গিয়াছিল যে, ঐগুলির কোন গোলযোগ নাই, কিন্তু ঐ দুর্ভাগা স্ত্রীলোকটি তাঁহার হৃৎপিন্ডের কষ্ট ও ধড়ফড়ানির জন্য হাটিতে পারিতেন না। তাহার সামান্য খুকখুকে কাশি ছিল, কিন্তু সে কিছুই নয়, কারণ তাহার ফুসফুস পরীক্ষিত হইয়াছিল এবং উহার কোনই দোষ ছিল না। তিনি এইভাবে প্রায় তিন মাস ভোগার পর এবং ক্রমশঃ অবসন্ন হইতে থাকিলে, ঐ পরিবারের আমার পক্ষীয় ব্যক্তিগণ অপর পক্ষকে বশীভূত করিয়া, পুনরায় আমাকেই ডাকিয়া পাঠাইলেন। আমি রোগিণীটিকে পরীক্ষা করিতে লাগিলাম, কিন্তু নির্দিষ্ট কিছুই পাইলাম না। পূর্বোক্ত কয়েকটি লক্ষণ ব্যতীত আর কিছু না পাইয়া, আমি অবশেষে এমোনিয়াম কার্বকেই স্থির করিলাম। তারপর তিনি আঠার মাস ঐ ঔষধে আছেন। এখন তিনি পর্বতারোহণ করিতে পারেন, যাহা কিছু করিতে চান সবই করিতে পারেন এবং গৃহস্থালীর কাজ করিতেও সক্ষম হইয়াছেন। স্নায়বিক অবসন্নতা হউক, মস্তিষ্কের ক্লান্তি হউক অথবা রোগ নির্ণয়কল্পে যে-কোন নামের রোগ চাপাইয়া দেওয়া হউক, তিনি এখন ঐ রোগ হইতে মুক্ত হইয়া সুস্থ স্ত্রীলোক হইয়াছেন এবং সুস্থ হইয়াছেন ঐ একটিমাত্র ঔষধেই। ইহা হইতে দেখা যাইবে—এই ঔষধটি কিরূপ গভীরভাবে কাৰ্য্য করে। এক মাত্রা ঔষধ সাধারণতঃ ছয় সপ্তাহ হইতে দুই মাস পর্যন্ত কাৰ্য্য করে এবং প্রত্যেকবারই তাঁহার স্বাস্থ্যের ক্রমিক উন্নতি সাধন করে।

প্রতিবার ঋতুকালেই অবসন্নতা দেখা দেয়। ঋতুর প্রথম দিনেই কলেরা অথবা যাহাকে কলেরা বলিয়া ভুল হয় এরূপ প্রবল উদরাময় দেখা দেয়। সময়ে সময়ে ভিরেট্রাম’ সদৃশ সবমন অবসন্নতা, তৎসহ শীতলতা, নীলবর্ণতা, হিমাঙ্গতা, শ্বাসকৃচ্ছ্রতা দেখা দেয়। এই শ্বাসকষ্ট, আমি যাহার কথা এতক্ষণ ধরিয়া বলিয়া আসিতেছি, তাহা হাঁপানিজনিত শ্বাসকষ্ট নহে; ইহা হৃৎপিন্ডের দুৰ্বলতাজনিত হৃৎপিন্ডসম্বন্ধীয় হাঁপানি। কিন্তু এই ঔষধে হাঁপানিও আছে এবং সেইরূপ হাঁপানির বিশেষত্ব—যদি ঘর গরম থাকে তাহা হইলে শ্বাসকৃতা বাড়িতে থাকে এবং ক্রমশঃ শ্বাসরোধের মত অবস্থা হয়, মনে হয় যেন শ্বাসের অভাবেই তাহার মৃত্যু হইবে। উপশমের জন্য সে ঠান্ডা হাওয়ায় বাহির হইতে বাধ্য হয়। হাঁপানি রোগের শ্বাসকৃচ্ছ্রতা গরম ঘরে বাড়িলেও, রোগীর শারীরিক লক্ষণ ঠান্ডাতেই খারাপ হয়। দৈহিক উপসর্গ এবং শিরঃপীড়া ঠান্ডাতে বাড়ে।

এই ঔষধের একটি সাধারণ সৰ্বাঙ্গীণ লক্ষণ হাড়ের মধ্যে কনকনানি। হাড়গুলি এরূপ কনকন করে যেন ঐগুলি ভাঙ্গিয়া যাইবে। আবহাওয়ার প্রত্যেকটি পরিবর্তনে, অথবা মুখমধ্যের উত্তাপের বাড়া-কমায় দাঁতগুলি ভীষণ কনকন করে । চোয়ালদ্বয় কামড়ায় অথবা দাঁতের গোড়ায় ব্যথা করে। আর একটি বিশিষ্ট লক্ষণ—চুলগুলি পড়িয়া যায়, আঙ্গুলের নখগুলি হলদে হইয়া যায়, দাঁতের মাড়ি দাত হইতে ছাড়িয়া যায়, রক্ত পড়ে, দাঁতগুলি আলগা হইয়া যায়,–এই সমস্তই স্কার্ভি রোগগ্রস্ত ধাতুর সদৃশ।

এই ঔষধে হিষ্টিরিয়া আছে এবং ইহাতে বিস্মিত হইবার কিছুই নাই যে, স্নায়বিক স্ত্রীলোকেরা তাহাদের হাতের সহিত এক শিশি এমোনিয়া ঝুলাইয়া রাখেন। অনেক স্ত্রীলোক এরূপ করেন কারণ, বদ্ধ স্থানে গেলেই তাহাদের মূর্চ্ছার উপক্রম হয় এবং তখন তাহারা নিশাদল দ্রবণ ব্যবহার করেন। স্ত্রীলোকদিগের এই অবস্থা যদি মৃদু প্রকৃতির হয়, তাহা হইলে উহা হিষ্টিরিয়া সঞ্জাত নহে, উহা স্ত্রীলোকদিগের স্নায়বিক প্রকৃতিজাত, কিন্তু ঐ অবস্থাই যদি আরও পরিস্ফুট হইয়া উঠে তাহা হইলে হিষ্টিরিয়া জন্মে। এমন কাৰ্ব্ব হৃৎপিন্ডের ক্রিয়াকে উদ্ৰিক্ত করিবে এবং উপশম দিবে।

এই ঔষধ মানসিক অবসাদে পরিপূর্ণ। রোগিণী, অত্যন্ত কাঁদেন। মূর্চ্ছার আক্রমণ হয়, নড়াচড়ায় উৎকণ্ঠা, অস্বচ্ছতা ও অবসন্নতা বোধ করেন। অন্য লোকে কি বলিল তাহা শুনিয়া স্নায়বিক হইয়া পড়েন। অপর লোকের কথা শুনিয়া উপসর্গগ্ৰস্তা হয়। মানসিক ও দৈহিক উভয় প্রকার উপসর্গই ঠান্ডা আবহাওয়ায় বাড়ে, তিনি ঠান্ডা, উন্মুক্ত, ভিজা, আবহাওয়ায় অত্যানুভূতিযুক্ত হন। উন্মুক্ত হওয়ায় তাঁহার গেঁটেবাত, স্নায়বিক রোগ, অবসন্নতা, হৃৎপিন্ডরোগ, শ্বাসকৃচ্ছ্রতা, শিরঃপীড়া উপস্থিত হয়। ভিজা আবহাওয়ায় এবং আবহাওয়ার পরিবর্তনে একপ্রকার রক্তসঞ্চয়জনিত শিরঃপীড়া দেখা দেয়। মনে হয়, যেন মস্তিষ্ক, চক্ষু ও কপাল দিয়া বাহির হইয়া আসিবে। “কপালে দপদপ করা, আঘাত করার ন্যায় অনুভূতি, যেন উহা ফাটিয়া যাইবে।” শিরঃপীড়া পা ফেলিলেই বাড়ে, বিশেষতঃ যেরূপ শিরঃপীড়া ঋতুকালে উপস্থিত হয়। শিরঃপীড়া প্রাতঃকালে বাড়ে। এই প্রকার শিরঃপীড়ার যে-সকল লক্ষণ আমি বর্ণনা করিলাম, তাহাতে এই ঔষধ ‘ল্যাকেসিসে’র সহিত প্রতিবিষ সম্বন্ধযুক্ত, কারণ ‘ল্যাকেসিস’ও এইরূপে অবসন্নকর অবস্থার সৃষ্টি করে। পুরাতন পাঠ্যপুস্তকে তুমি হয়ত দেখিয়াছ “ল্যাকেসিসের বিপরীত।” ইহার অর্থ উচ্চক্রমে ল্যাকেসিস’ দেওয়ার পর, উহা হয়তো আরোগ্যকর ক্রিয়া প্রকাশ করিবে না, কখন কখন উহা রোগের বিশৃঙ্খলা ঘটাইবে, লক্ষণগুলি গোলাইয়া দিবে। কিন্তু ল্যাকেসিস’ অতি নিম্নক্রমে দেওয়া হইয়া থাকিলে এবং রোগী অশক্তীকৃত ঔষধের দ্বারা বিষাক্ত হইলে, তখন এই ঔষধটি উচ্চক্রমে লক্ষণসাদৃশ্যহেতু প্রতিবিষের কাৰ্য্য করিবে। ইহা রোগীর বিষাক্ততার অধিকাংশ লক্ষণই দুর করিবে। যে লোককে সাপে কামড়াইয়াছে, তুমি যদি তাহার চেহারা পৰ্যবেক্ষণ কর এবং তারপর যদি এই ঔষধের ক্রমপ্রকাশন-পদ্ধতি পরীক্ষা কর, তাহা হইলে তুমি এতদূভয়ের মধ্যে যথেষ্ট সাদৃশ্য পাইবে। একথা সকলেই জানে যে, এই ঔষধ বহুক্ষেত্রে সর্পদংশনে ব্যবহৃত হইয়াছে। অবশ্য ইহা দ্বারা সেই সব রোগীর সকলেই বাচিয়া যায় নাই, কিন্তু ইহা সেই সব রোগীর নিশ্চিতই কিছু-না-কিছু উপকার করিয়াছিল, নতুবা ইহা এত বেশী সুখ্যাতিতে প্রতিষ্ঠিত হইতে পারিত না। ইহাকে সব সময়েই সর্পবিষের প্রতিবিষ হিসাবে ব্যবহার করিও না, কিন্তু যখন রক্ত বিষাক্ততায় এবং অন্তরুৎসেক্যসহ জীবজন্তুর দংশনে লক্ষণসাদৃশ্য পাওয়া যায় এবং ইলান্সে’র ন্যায় কৃষ্ণবর্ণ তরল রক্তস্রাবপ্রবণতা থাকে তখন ইহাকে ব্যবহার করিও। সর্প বিষয়গুলির সর্বত্রই কাল রক্তস্রাবের প্রবণতা আছে এবং ঐ রক্ত জমে না।

ইহার অনেকগুলি চক্ষু-লক্ষণ আছে। শিরঃপীড়ার সহিত সম্বন্ধযুক্ত চক্ষুর সম্মুখে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ দেখা, একটি জিনিষ দুইটি দেখা, আলোকাতঙ্ক। “সেলাই করার পর চক্ষুর সম্মুখে বড় বড় কাল দাগ ভাসিয়া বেড়ায়।” আমি যেরূপ বর্ণনা করিয়াছি, সেইরূপ ধাতুগত অবস্থায় এই সকল বর্তমান থাকিলে এই ঔষধে চক্ষুর ছানিরোগ আরোগ্য হইয়াছে। ইহা রোগীকে আরোগ্য করিয়াছে এবং অবশেষে চক্ষুর আলোকাচ পরিষ্কার হইয়া গিয়াছে। চক্ষুতে জ্বালা, চক্ষুতে কুটকুটানি, চক্ষুর আরক্ততা।

ইহাতে শ্রবণশক্তির বিশৃঙ্খলা ঘটায়, ফলে রোগী কম শুনে এবং কান হইতে বিদাহী স্রাব নির্গত হয়।  যেরূপ বর্ণিত হইয়াছে, আমরা সেইরূপ স্কার্ভিরোগ সদৃশ নাকের সর্দিজ অবস্থা পাই। নাসিকাস্রাব বিদাহী। নাকের ঠিক উপরিস্থিত মস্তিষ্ক যেন স্বতঃই ঠেলিয়া বাহির হইতেছে এরূপ তীব্র যন্ত্রণা।” “প্রাতঃকালে মুখ-হাত ধুইবার সময় নাসাপথে রক্তপাত।” স্নান করিলে ইহার বহু উপসর্গ উপস্থিত হয় এবং একটি বিশেষ প্রকৃতি এই যে, স্নানের পর চৰ্ম্ম লালবর্ণ তালিতালি দাগে পূর্ণ হইয়া যায়। স্নান করিলে সর্বাঙ্গে যেখানে সেখানে রক্তোচ্ছ্বাস অনুভূত হয় এবং নাক হইতে রক্ত পড়ে। স্নান করিলে বুক ধড়ফড়ানি বাড়ে।

গলার মধ্যে আমরা যেরূপ অবস্থা দেখি, তাহা সাঙ্ঘাতিক আরক্ত জ্বর, ডিপথেরিয়া এবং অন্যান্য রক্তবিষাক্ততাযুক্ত রোগের ন্যায়; বেগুনিবর্ণ, স্ফীত, ক্ষতযুক্ত; রক্তপাতবিশিষ্ট ও বিগলিত ক্ষতযুক্ত; তৎসহ অত্যন্ত অবসাদ এবং টনসিল ও অন্যান্য গ্রন্থির স্ফীতি। গলা ও ঘাড়ের বাহিরদিকের গ্রন্থিগুলি স্ফীত এবং ডেলার ন্যায় অনুভূতিযুক্ত। ডিপথেরিয়া রোগে নাক বুজিয়া যাওয়ায় শিশু নিঃশ্বাসের জন্য হাঁপাইয়া ঘুম হইতে লাফাইয়া উঠে। এখানেও আমরা আবার ‘ল্যাকেসিস’ ও সর্পবিষের সহিত ইহার সম্বন্ধ দেখি, কারণ রোগী ঘুমাইয়া পড়ার অল্পক্ষণমধ্যেই শ্বাসরোধ ভাবের সহিত জাগিয়া উঠে। ডিপথেরিয়া ও অত্যন্ত অবসন্নকর বক্ষরোগে রোগী নিদ্রা পরই অধিক খারাপ বোধ করে।

অতি শীঘ্র শীঘ্র ঋতুস্রাব। “ঋতুস্রাবের রক্ত কৃষ্ণাভ এবং প্রায়ই চাপচাপ।” প্রদরস্রাব ক্ষতকর। “উদরে ও যোনিদেশে প্রবল ছিন্নকর বেদনা।” “ভগাঙ্কুরের উত্তেজনা।” জননেন্দ্রিয়ের স্ফীতি। এইবার আমি তোমাদিগকে এমন কিছু বলিব, যাহা এখানে বলা হয় নাই, কিন্তু তথাপি প্রয়োজনীয়। উহা—সমগ্র বস্তিকোটরের যন্ত্রগুলিতে ক্ষতবৎ ব্যথার অনুভূতি, সময়ে সময়ে মনে হয়, যেন তাহার সমগ্র আভ্যন্তরিক যন্ত্রগুলি হাজিয়া গিয়াছে। ইহা ক্ষততার অনুভূতি, কিন্তু সৰ্ব্বদা স্পর্শদ্বেষযুক্ত নয়। এই অনুভূতিটি গভীর স্থানের এবং ঋতুকালেই অধিক অনুভূত হয়। সমগ্র ঋতুকাল ব্যাপিয়া ক্ষততা এবং ছড়িয়া যাওয়ার ন্যায় বোধ হয়। “ঋতুস্রাব অগ্রগামী, প্রচুর কৃষ্ণাভ, প্রায়ই চাপচাপ; এবং তৎপূৰ্ব্বে কামড়ানি ও শূলবৎ ব্যথা।”

এই ঔষধ বুকে ও বায়ুপথে যথেষ্ট শ্লেষ্মার ঘড়ঘড়িযুক্ত সর্দি ও কাশি লক্ষণ আছে। শ্বাসের গুরুত্ব, একপ্রকার সর্দিজ শ্বাসকৃচ্ছ্রতা। লক্ষণ মিলিলে এই ঔষধ—ফুসফুসের অধঃপাতিত রক্তসঞ্চয়, তুলিয়া ফেলিতে কষ্টসহ ফুসফুস শ্লেষ্মায় পূর্ণ হইয়া থাকা, বুকে অত্যন্ত ঘড়ঘড়ি এবং দুর্বলতায় বিশেষ উপযোগী। ইহা যক্ষ্মারোগের শেষ অবস্থায় বেশ উপশমদায়ক ঔষধ। বুকের অত্যন্ত শীতলতা, অবসন্নতা ও দুর্বলতা থাকিলে একমাত্র এমোনিয়াম কার্ব দিবে। স্ট্যানামে যেরূপ বক্ষের দুর্বলতা আছে, ইহার দুর্বলতাও তাহা হইতে ভিন্নপ্রকার নয়। রোগী জোরে কাশিতে পারে না এবং এন্টিম টার্টে’র ন্যায় দুর্বলতার জন্য শ্লেষ্মা তুলিয়া ফেলিতে পারে না। হ্রস্ব হাঁপানির ন্যায় কাশি।

এই ঔষধের রোগগুলি বিশেষভাবে শেষ রাত্রে ৩টার সময় উপস্থিত হয়। কাশি ঐ সময়ে উপস্থিত হয়। যে-সকল বৃদ্ধ লোক বুকের সর্দিতে ভুগে, তাহাদের বৃদ্ধি-লক্ষণ শেষ রাত্রি ৩টার সময় উপস্থিত হয়, তৎসহ বুক ধড়ফড়ানি এবং অবসন্নতা থাকে, রোগী জাগিয়া উঠে, তাহার ঘৰ্ম্ম ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। সে প্রায় নাড়ীহীন হইয়া পড়ে; হৃৎপিন্ডের দুর্বলতা; বিবর্ণ ও ঠান্ডা মুখমন্ডল ।

“অত্যন্ত অবসন্নতা।” প্রবল বিষদুষ্ট রোগে, টাইফয়েড, ডিপথেরিয়া, আরক্ত জ্বর, ইরিসিপ্লাস প্রভৃতি রোগে অথবা ঐরূপ রোগের শেষদিকে অসম্পূর্ণ প্রতিক্রিয়া। যে-সকল রোগ চরম সন্ধিক্ষণে উপস্থিত হয়, তাহাতে রোগী সুনিৰ্বাচিত ঔষধ দেওয়া সত্ত্বেও অত্যন্ত অবসন্ন হইয়া পড়ে, তাহা হইলে তোমরা এরূপ একটি উদাহরণ পাইলে, যেখানে স্নায়বিক অবসন্নতার জন্য এই ঔষধটি আর্সেনিকের সহিত প্রতিযোগিতা করিতে পারিবে। তোমরা দেখিয়াছ পুরাতন মতাবলম্বিগণের সাহিত্যে “হার্টফেল হওয়া বলিয়া একটি কথা আছে। তাহারা বলেন যে, রোগীটির বেশ উন্নতি হইতেছিল, কিন্তু অবশেষে সে হার্টফেল করিয়া মারা পড়িল। বহুক্ষেত্রে সময় থাকিতে এমোনিয়াম কার্ব দিতে পারিলে, উহা রোগীর জীবন রক্ষা করিত।

“খোলা বাতাসে ভ্রমণ করিতে চায় না।” “শিশুরা স্নান করিতে চায় না।” শয্যার গরমে বাতবেদনার উপশম হয়, শীতের উপশম হয়। “গরম ঘরে শিরঃপীড়ার উপশম হয়।” “স্নান করিলে নাসিকার রক্তস্রাব, নীলবর্ণ হস্তদ্বয়, শিরাসমূহের স্ফীতি প্রভৃতি লক্ষণ প্রত্যাবৃত্ত হয়।” “ঠান্ডা হাওয়া বৃদ্ধি।

এইবার আমরা চৰ্ম্মের আকৃতিতে উপস্থিত হইলাম। “শরীর যেন আরক্ত জ্বরের উদ্ভেদ পূর্ণ হইয়া গিয়াছে, এরূপ লালবর্ণ।” তীব্র অনুভূতিযুক্ত দুর্গন্ধ চেপ্টা ক্ষত।” “নিদ্রালুতা,—নিদ্রায় চমকিয়া উঠার সহিত সাঙ্তিক আরক্ত জ্বর।” “মস্তক-লক্ষণ দেখা দিয়াছে, বৃদ্ধগণের এরূপ ইরিসিপ্লাস রোগ।” যখনই কোন গুরুতর প্রকৃতির রোগীর চিকিৎসা করিতে যাওয়া হয় এবং চৰ্ম্মের উপরে কাঙ্কল বা বিসর্পের ন্যায় কোন উদ্ভেদ প্রকাশ পায় এবং সেইজন্য রোগী উপশম পায় না, তখন বুঝিতে হইবে যে, বিপদের সম্ভাবনা। এরূপ ক্ষেত্রে শীঘ্রই একটি ঔষধ খুঁজিয়া , বাহির করিতে হইবে। রোগী যখন প্রবল আভ্যন্তরিক পীড়ায় ক্রমেই শয্যাগত হইতে থাকে, তখন অনেক সময়েই দেখা যায় যে, চর্মের উপর দুষ্টজাতীয় ফোঁড়া, কাৰ্বল অথবা ইরিসিপ্লাসের উদ্ভেদ বাহির হইয়া পড়ে। যদি এইগুলি প্রকাশের অব্যবহিত পরে রোগী উপশম বোধ না করে, তাহা হইলে অবস্থাটি সৰ্ব্বদাই সাঙ্তিক হইয়া উঠে। ইহাতে বুঝা যায় যে, একটি সাঙ্ঘাতিক অবস্থা, এতদিনও আটকান ছিল, কিন্তু আর তাহাকে চাপিয়া রাখা যাইতেছে না, সুতরাং উহার প্রচন্ডতা রোগীকে ধ্বংস করিতেই উদ্যত হইয়াছে। এইরূপ অবস্থার প্রসার দমন করিবার জন্য তুমি যে-সকল ঔষধকে খুঁজিবে, ইহা তাহাদের মধ্যে একটি। বস্তুতঃ যে ঔষধটি লক্ষণসমষ্টির সহিত মিলিবে, তাহাই প্রয়োগ করিবার উপযুক্ত।

অপর নাম – স্মেলিংসল্ট (Smelling Salt)

কার্বনেট অফ অ্যামোনিয়া (Carbon ate of Ammonia)

হোমিওপ্যাথি ঔষধার্থে অ্যামোনিয়াম কার্বনেটকে ৯ গুণ জলের সঙ্গে মিশিয়ে অরিষ্ট তৈরী করা হয়।

এমন কাৰ্ব্বের – মূলকথা

১। প্রাতঃকালে মুখ ধোয়ার সময় নাক দিয়ে রক্ত পড়ে।

২। দুৰ্ব্বলতা, বক্তশূন্য, থলথলে বা লাল চর্ম বিশিষ্ট রমণী। দুৰ্বলতার

জন্য প্রতিক্রিয়ার অভাব, যারা স্মেলিং সল্ট ব্যবহারে অভ্যস্ত তাদের

পক্ষে ইহা উপযোগী।

৩। গ্রন্থিসমূহের গ্যাংগ্রিন বা পচন হওয়ায় প্রবণতা, যেমন স্কার্লেটিনায়, কর্ণমূল গ্রন্থির (Parotids) পচন।

এমন কাৰ্ব্ব – পর্যালোচনা

গ্যারেন্সী বলেছেন যে, সকল নারী স্বভাবতঃ কোমলাঙ্গী, সহজে মূর্চ্ছা যায় ও সৰ্ব্বদা স্মেলিং সল্টের শিশি কাছে রাখে, তাদের পক্ষে ইহ বিশেষ উপযোগী। তারা দুৰ্ব্বল, রসপ্রধান ধাতু এবং প্রতিক্রিয়া শূন্য হয়। তারা উত্তেজক পদার্থ, বিশেষ করে স্পিরিট অফ অ্যামোনিয়া, ক্যাম্ফর, মাস্ক, অ্যালকোহল প্রভৃতি যে সকল পদার্থ । নাকে স্নায়ুর দ্বারা কাজ করে, সেই সকল পদার্থ চায়। * সেরিব্রোস্পাইন্যাল মেনিনজাইটিস রোগের আক্রমণের প্রথমেই সহসা অতিশয় অবসাদ জন্মে। তাই তখন প্রতিক্রিয়া শক্তিকে উত্তেজিত করার জন্য এবং উদ্ৰিক্ত জীবনীশক্তি যাতে পরবর্তী লক্ষণীনুসারে সুনির্বাচিত ঔষধের সাহায্যে বোগশক্তির সঙ্গে সংগ্রাম করতে পারে, এরূপ অবস্থা সৃষ্টি করার জন্য একে একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

এমোনিয়াম কার্বনিকাম পুরাতন ও তরুণ শুষ্ক নাসাবদ্ধকারী সর্দির পক্ষে একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ। রোগীর লক্ষণসমূহ রাত্রে বাড়ে, তাকে মুখ হাঁ করে শ্বাস নিতে হয়। স্যাম্বুকাস, লাইকোপোডিয়াম, নাক্স ভমিকা, ও ষ্টিকটা পালমোনিয়ার সঙ্গে একে তুলনা করা যেতে পারে।

* এর আর একটি নাসিকার লক্ষণ বার বার প্রমাণিত হয়েছে, যথা প্রাতে মুখ ধোয়ার সময় নাক দিয়ে রক্ত পড়া (কেলি কার্বনিকাম)। আমি জানি না কেন উহা তখন আসে, কিন্তু উহা আসে এবং এই ঔষধে আরোগ্যও হয়। আর একটি মাত্র রোগে আমি একে উপযোগী হতে দেখেছি, তা হল স্কার্লোটিনা। রোগীর দেহ অত্যন্ত লাল এমনকি প্রায় নীলাভ লাল। মনে হয় যেন গলাতেই রোগের কেন্দ্র ও শক্তি নিবদ্ধ থাকে এবং ঐ স্থানেই রোগের মারাত্মক হওয়ার প্রবণতা পরিসমাপ্ত হবে বলে বোধ হয়। উদ্ভেদণ্ডলি সামান্যই প্রকাশিত হয়, অথবা জীবনীশক্তিৰ দুৰ্বলতাবশতঃ উদ্ভেদ মিলিয়ে যাবে বলে মনে হয়। * (জিঙ্কে ঐ কারণে আক্ষেপ উপস্থিত হয়।)

বৃদ্ধ দুর্বল ব্যক্তিদের বিসর্প (erysiplas) বোগও ঐ শিরোনামের অন্তর্ভুক্ত। মদ্যপান জনিত আচ্ছন্ন নিদ্রার (drunken stupor) মত মস্তিষ্ক লক্ষণ উভয় রোগেই বর্তমান থাকে; মনে হয় সমগ্র দেহযন্ত্র রোগ বিষক্রিয়ায় অভিভূত হয়ে পড়েছে (এইল্যান্থাস দ্রষ্টব্য)। এইরূপ অবস্থায় কখন কখন এমন কাৰ্ব্ব দ্বারা উপকার পাওয়া যায়।

Am-c : Ammonium Carbonicum
Sluggish and dull minded state. Weakness and exhaustion.Epistaxis on washing the face.Tired, oppressed feeling in the chest.


COMMON NAME:

Smelling salt


A/F:

-Charcoal fumes

-Snake bite, stings of insects

-Exposure to cold, stormy, wet weather


MODALITIES:

< Evenings

< Washing

< From cold wet weather

< Cloudy weather

< Wet applications

< During 3 to 4 a.m.

< During menses

< Wet poultices

< During motion

< Chewing

< Pressing teeth

< While or after eating

< Right side

> Pressure

> Lying on painful side

> Lying on stomach

> Dry weather

> New moon

> Eating


MIND:

-Active, but soon exhausted.

-Forgetful, ill – humoured, gloomy, during stormy weather.

-Headless and unruly, disobedience.

-Depressed with weakness of intellect.

-Vacant mind.

-Loss of memory < vexation.

-Hearing others talk or talking himself, affects him.

-Aversion to work.

-Peevish, fretting, as if crime has been committed.

-Disposed to weep, sadness.

-Tendency to make mistakes in speaking, writing and calculating.

-Timidity of character.

-Apprehensive.

-Great restlessness in the evening.

-Uncleanliness.

-Quarrelsome during menses.

-Talking in sleep about what he thought when awake, reveals secrets in sleep.

-Fear of misfortune in the morning.

-Aversion to women. Aversion to sea.

-Reserved during menses.

-Irritability after eating, during headache, during menses.

-Oversensitive to sensual impression.


GUIDING INDICATIONS:

-It is adapted to stout, fleshy women, with various troubles in consequence of leading a sedentary life. Delicate women, who must have the smelling bottle constantly at hand.

-It is adapted to fat patients, with weak heart, with wheezing and suffocative feeling.

-Very sensitive to cold air.

-Great aversion to water, cannot bear to touch it. Children dislike washing.

-Pains-bruised and sore, there is internal raw burning.

-Discharges-hot, acrid, adherent.

-It is right sided remedy.

-Haemorrhagic tendency-blood dark, degenerated, watery, offensive and noncoagulable blood.

-Ulceration tends to gangrene.

-Heaviness in all organs.

-Head-Headache with sensation of fullness as if forehead, would burst, shocks through head.

-Mouth-Toothache during menses.

-Pressing teeth together, sends shocks through head, eyes and ears.

-Tender, bleeding gums.

-Throat-Putrid sore throat.

-Tendency to gangrenous ulceration of tonsils, glands engorged.

-Diphtheria, when nose is stopped up, membrane extends to upper lip.

-Nose-Nosebleed when washing the face and hands in the morning, from left nostril after eating.

-Stoppage of nose at night, with long continued coryza, must breathe through mouth.

-Loses breath when falling asleep, must awaken to get dream.

-Snuffles of children. Inability to blow the nose in children.

-Ozaena, blowing bloody mucus from the nose frequently, blood rushes to tip of nose when stooping.

-Respiratory system-Emphysema.

-Cough-dry, every morning from 3 to 4 a.m.

-from tickling in throat as from dust

-with dyspnoea, palpitation, burning in the chest

-after influenza.

-Rattling in the chest but gets up little breathless.

-Much oppression in breathing, worse after any effort.

-Asthenic pneumonia.

-Slow, laboured, stertorous breathing, bubbling sound.

-C.V.S.-Heart weak. Wakes with difficult breathing and palpitation.

-Palpitation audible, with fear, cold sweat, lachrymation, inability to speak, loud breathing and trembling hands.

-Female genitalia-Cholera like symptoms at the commencement of menstruation.

-Menses-too frequent, profuse, early, copious, clotted, black

-with colicky pains and hard, difficult stool

-with fatigue, especially of thighs

-with yawning and chilliness

-with toothache, sadness.

-Menses flow more at night or when sitting, then dyspnoea, and weakness.

-Leucorrhoea-copious, burning, acrid, watery from the vagina, with excoriation of vulva.

-Bleeding piles during menses.

-Extremities-Panaritium, deep seated periosteal pain.

-Pain in wrist joints when sprained long ago.

-Drowsy by day, sleepless by night.


KEYNOTES:

1. Nosebleed when washing the face and hands in the morning, from left nostril, after eating.

2. Pressing teeth together sends shocks through head eyes and ears.

3. Cholera-like symptoms at the commencement of menses.

4. Children dislike washing.


NUCLEUS OF REMEDY:

-Weak, nervous, persons of a lymphatic or nervous temperament; stout, sedentary women who always have the smelling bottle at hand, unclean in body habit.

-Inflammation of mucous membranes tending to ulceration and gangrenous states.

-Sluggish circulation causing lividity, weakness, drowsiness and low vitality, with lack of reaction.


CONFIRMATORY SYMPTOMS:

1. Stout, nervous, fleshy women leading a sedentary life.

2. Nosebleed when washing the face.

3. Stopping of nose mostly at night, must breathe through the mouth; snuffles of infants.

4. Cough < 3 – 4 a.m.

5. Cholera like symptoms at commencement of menses.


CLINICAL:

-Allergy, Bronchitis, Congestive cardiac failure, Epistaxis, Haemorrhoids, Pharyngitis, Pulmonary oedema, Rhinitis, Sinusitis, Thyroiditis.

-Cough following influenza when Bryonia does not work, give Am-c- Dr. Tyler.


REMEDY RELATIONSHIPS:

Follows Well : Ars, Bell, Bry, Calc, Graph, Hep, Kali-c, Lyc, Merc, Nux-v, Phos, Puls, Rhus-t, Sep, Sil, Sulph.

Inimical : Lach.

Compare : Am-br, Am-m, Am-p, Ant-t, Apis, Arn, Ars, Aur, Bell, Calc, Cocc, Hep, Kali-bi, Kali-c, Lach, Laur, Nat-m, Phos, Puls, Rhus-t, Ruta, Staph, Sulph, Verat.

Antidoted By : Arn, Camph, Hep, Rhus-t.

It Antidotes : Brom, Cench, Piloc, Rhus-t.

Duration Of Action : 40 Days.


About The Author

D.H.M.S (Dhaka), M.M (BMEB) Consultant Homoeopathic physician Researcher, books author and speaker Owner of HD Homeo Sadan  CEO of HD Health Lecturer: Ashulia Homeopathic Medical College

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *