Am-m | দুই কাঁধের মাঝখানে ঠান্ডা অনুভূতি। |
Am-m | অধিকাংশ রোগে মুখশ্রী পাংশু দেখা যায়। |
Am-m | প্রচুর আঠা আঠা সর্দি স্রাব, মুখের ভিতরে, গলার ভিতরে (Pharynx) পিচ্ছিল অনুভূতি। |
Am-m | ঘায়ের ব্যথার মত ব্যথা, হাত ও পায়ের অঙ্গুলিতে ঝাঁকানিযুক্ত ছিড়ে ফেলার মত ব্যথা, কোমরে ব্যথা। |
Am-m | সার্ভাইক্যাল গ্রন্থির (Cervical gland) স্ফীতি। |
Am-m | বুকে ভর ভর শব্দ হয় ও চটচটে শ্লেষ্মা উঠে। |
উপযোগিতা — তাদের পক্ষে, যারা মোটা ও আলসে, যাদের দেহের উপরের দিক বড় ও মোটা কিন্তু পায়ের দিক সরু।
সর্দি – জলের মত অথচ হাজাজনক, ঠোঁট হেজে যায়। (এলিয়ম সিপা)। ঋতুকালে উদরাময়, পেট খারাপ, বমি হয়, অন্ত্র হতে রক্তস্রাব (ফস); ঐ সময় পায়ের পাতায় স্নায়ুশূল; রজঃস্রাব রাতে বেশী হয় (বোভিষ্টা, শুয়ে থাকলে = ক্রিয়ো)।
দুর্দম্য কোষ্ঠবদ্ধ — সেই সাথে প্রচুর অধঃ বায়ু বের হয়।
মল – শক্ত, ভেঙ্গে ভেঙ্গে বের হয়, মলত্যাগে অত্যন্ত বেগ দিতে হয়; মলদ্বারের মুখ হতে মল টুকরো টুকরো হয়ে বের হয় (এমন-মি) মলের রঙের পরিবর্তন দু-বারের মল একই রকম হয় না (পালস্)।
অর্শরোগ — ক্ষতবৎ ব্যথা, চিড়িক মারা ব্যথা, সেইসাথে জ্বালা ও হুলবেধার মত ব্যথা (ইস্কিউ, সালফ); বিশেষ করে শ্বেতপ্রদর চাপা পড়ার পর অর্শরোগ হলে উপযোগী।
শ্বেতপ্রদর – ডিমের সাদা অংশের (Albumen Part) মত; স্রাব শুরুর আগে নাড়ীর চারদিক কামড়ায়; বাদামীরঙের, পিছল, ব্যথাশূন্য স্রাব, প্রতিবার মূত্রত্যাগের পরে প্রদরস্রাব। পিঠে দুই কাঁধের মাঝে শীত বা ঠান্ডা অনুভূতি (ল্যাকেন্যানথিস) হাঁটতে গেলে পায়ের হ্যামস্ট্রিং পেশীতে (হ্যামস্ট্রিং = পায়ের পেছনে হাঁটু ও উরুর যোগাযোগকারী দড়ির মত শক্ত যে মাংসপেশী) ব্যথা করে—সন্ধিগুলিতে টানটানভাব মনে হয় যেন পেশীগুলো ছোট হয়ে গেছে (কষ্টি, সাইমেক্স)।
পায়ের পাতার ঘামে দুর্গন্ধ (এলুমিনা, গ্রাফা, সোরিন, স্যানিকি, সাইলি)।
সম্বন্ধ – এই ওষুধের পর এ-ক্রুড, ফস, পালস্, স্যানিকি ভাল কাজ দেয়।
শক্তি — ৩০, ২০০ ।
টাইফয়েড রোগাবস্তার ন্যায় একপ্রকার দুর্বলতা এই ঔষধটি তৈরী করে থাকে। সকল প্রকার শ্লেষ্মাস্রাবের পরিমান বৃদ্ধি পায় এবং ভিতরে জমে থাকে। এটি বিশেষভাবে মেদযুক্ত ও থলথলে ব্যক্তি, যারা শ্বাস-প্রশ্বাসের রোগে কষ্ট পাচ্ছে, তাদের ক্ষেত্রে বেশি উপযোগী। কাশির তৎসহ সর্দি ও যকৃতের রোগ। অনিয়মিত রক্ত চলাচল প্রবণতাযুক্ত, রক্তের মধ্যে প্রতিনিয়ত কোলাহল, যেন ধক্ধক্ করছে প্রভৃতি। বহুপ্রকার লক্ষণ ভাগের সঙ্গে কাশি, প্রচুর পরিমানে চকচকে ও চটচটে ভাব থাকে। এই ঔষধটির উপসর্গের বৃদ্ধির সময়ের সঙ্গে, আক্রান্ত শারীরিক অঙ্গের সঙ্গে বিভিন্ন প্রকারের সম্পর্ক আছে এবং এই লক্ষণটি একটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণ বিশেষ, যেমন, মাথা ও বুকের লক্ষণগুলির সকালের দিকে বৃদ্ধি হয়, পেটের লক্ষণ বিকালের দিকে, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বেদনা, চামড়ার লক্ষণ ও জ্বরের লক্ষণগুলির বৃদ্ধি সন্ধ্যায় হয়। যেন ফুটছে এই জাতীয় অনুভূতি।
মন – বিষন্ন, আশঙ্কা যুক্ত, অন্তরের ভিতরে চেপে রাখা দুঃখের ফলে এরূপ অবস্থা দেখা দেয়। খুব কাঁদতে ইচ্ছা করে, কিন্তু পারে না। শোক-দুঃখের কুফল।
মাথা – মাথার চুল পড়ে যায়। তৎসহ মাথায় চুলকানি ও খুস্কি। মাথায় চাপবোধ, পূর্ণতার অনুভূতি, সকালের দিকে বৃদ্ধি।
চোখ – চোখের সামনে ঝাপসা, দৃষ্টি সংক্রান্ত ভ্রান্তি, ঠিক ছানি পড়ার পূর্বে, ক্যাপস্যুলের ক্যাটার্যাক্ট।
নাক – হাজার, গরম, জলের মত পাতলা সর্দিজ স্রাব, যার ফলে ঠোঁট হেজে যায়। হাঁচি, নাক স্পর্শ করলে টাটানির ন্যায় ব্যথা, নাকের ছিদ্রে ক্ষতবৎ বেদনা। ঘ্রানশক্তি কমে যায়, নাক বন্ধ, শ্বাসরোধকর অবস্থার ন্যায় অনুভূতি, সর্বদা জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে এই অবস্থা কমাবার বৃথা চেষ্টা করে রোগী চুলকানি।
মুখমণ্ডল – প্রদাহজনিত মুখমণ্ডলের বেদনা। মুখগহ্বরে ও ঠোঁটে ক্ষতবৎ বেদনা ও হাজাকর অবস্থা।
গলা – টনসিল স্ফীত ও দপদপ করে, খুব কষ্ট করে ঢোক গিলতে হয়। আলজিহ্বার পিছনে ক্ষতস্থানের ন্যায় বেদনা, যা আহারে উপশম হয়। গলা বাইরের দিকে ও ভিতরের দিকে ফোলা তৎসহ আঠার মত চটচটে শ্লেষ্মা। এই শ্লেষ্মা এত চটচটে যে, চেষ্টা করে তুলে ফেলা যায় না। টনসিলের প্রদাহ। অন্ননলীর সংকীর্ণতা।
পাকস্থলী — লেমোনেড পান করার পিপাসা, ঢেকুরের সঙ্গে খাবার উঠে, মুখ দিয়ে তেতো জল উঠে। বমি বমি ভাব। পাকস্থলীর ভিতর দংশন করার ন্যায় বেদনা। খাবার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পেটের উপরের অংশে বা ইপি গ্যাসট্রিক স্থানে যন্ত্রণা। পাকস্থলীর ক্যানসারে।
উদর – প্লীহাতে সূঁচ ফোটার মত যন্ত্রণা, বিশেষতঃ সকালের দিকে, তৎসহ কষ্টকর শ্বাসপ্রশ্বাস। নাভীর চারিপাশে বেদনা। গর্ভকালে, পেটের লক্ষণগুলি দেখা দেয়। যকৃত স্থানে পুরাতন রক্তাধিক্য অবস্থা। পেটের চারপাশে মেদাধিক্য। প্রচুর পরিমানে বাতকর্ম। কুঁচকিস্থানে টান অনুভব করে।
সরলান্ত্র – চুলকানি ও অর্শ, ক্ষতের ন্যায় টাটানি তৎসহ পুঁজযুক্ত উদ্ভেদ। মলশক্ত, ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ে অথবা চকচকে শ্লেষ্মা দ্বারা পূর্ণ। পেরিনিয়ামে হুল ফোটার মত বেদনা। পর্যায়ক্রমে সবুজ শ্লেষ্মাযুক্ত মল ও কোষ্ঠকাঠিণ্য। মলত্যাগের সময় ও পরে, . সরলান্ত্রে জ্বলন ও খোঁচা মারার ন্যায় বেদনা। প্রদর স্রাব চাপা পড়ার পর অর্শ।
স্ত্রী-রোগ — ঋতুস্রাব নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগে, প্রচুর, কালচে ও জমাট বাঁধা, স্রাব রাত্রে বেশী হয়। গর্ভকালে, পেটের বামদিকে টান ধরার মত বেদনা। ঋতুস্রাব চলাকালীন অবস্থায়, উদরাময়,মল সবুজ শ্লেম্মাযুক্ত ও নাভির চারিপাশে বেদনা। প্রদরস্রাব, অনেকটা ডিমের সাদা অংশের মত দেখতে। (এলুমিনা, বোরাক্স, ক্যালফস), তৎসহ নাভির চারপাশে বেদনা। প্রতিবার প্রস্রাবের পর বাদামী রঙের পিচ্ছিল স্রাব নির্গত হয়।
শ্বাস-প্রশ্বাস – স্বরভঙ্গ ও কণ্ঠনলীতে জ্বালা, শুষ্ক, খুকখুকে কাশি, চিৎ হয়ে অথবা ডানদিক চেপে শুলে বৃদ্ধি। বুকের ভিতর সুঁচ ফোটার মত ব্যথা। বিকালের দিকে প্রচুর কাশি, তৎসহ প্রচুর শ্লেম্মা নির্গত হয় এবং বুকের ভিতর ঘড়ঘড় শব্দ। বুকের ভিতর ক্ষুদ্রক্ষুদ্র অংশে জ্বালা, শ্লেষ্মা অল্প, কাশি তৎসহ প্রচুর লালাস্রাব।
পিঠ – কাঁধের দুটি অংশের মধ্যবর্তী স্থানে বরফের ন্যায় শীতলতা, এই ঠাণ্ডা ভাব গরম কাপড়ে ঢাকার পরেও কমে না, এরপর চুলকায়। বসে থাকার সময় ককসিক্স স্থানে থেঁতলে যাবার ন্যায় বেদনা।
অঙ্গ প্রত্যঙ্গ – হাতের আঙ্গুলের অগ্রভাগে ক্ষতের ন্যায় বেদনা। হাত ও পায়ের আঙ্গুলগুলির অগ্রভাগে তীর বেঁধার মত ও ছিঁড়ে ফেলার ন্যায় যন্ত্রণা। পায়ের গোড়ালিতে ক্ষতের ন্যায় বেদনা। হাঁটুর পেশী বন্ধনীর সঙ্কোচন। সাইয়েটিকার বেদনা, বসে থাকলে বৃদ্ধি, শুয়ে থাকলে উপশম। অস্ত্রোপচার হওয়া অঙ্গে স্নায়ুশূল। পায়ের পাতায় দূর্গন্ধযুক্ত ঘাম। ধাতুস্রাবের সময় পায়ের পাতায় যন্ত্রণা।
চামড়া – চুলকানি, সাধারণতঃ সন্ধ্যায়। শরীরের বিভিন্ন অংশে ফোস্কার মত উদ্ভেদ। তীব্র জ্বালা, ঠাণ্ডা প্রলেপ উপশম।
জ্বর – সন্ধ্যায় শুয়ে পড়ার পর শীত বোধ ও ঘুম থেকে জেগে উঠার পর, তৃষ্ণাহীনতা। হাতের তালু ও পায়ের তলা উত্তপ্ত। অস্বাস্থ্যকর জলবায়ুতে অল্প ঘুষঘুষে জ্বর। নিম্নতর শক্তি উপযুক্ত।
কমা বাড়া – উপশম, মুক্ত বাতাসে। বৃদ্ধি, মাথা ও বুকের উপসর্গ সকালে, পেটের লক্ষণ বিধানে।
সম্বন্ধ – দোষগ্ন কফিয়া, নাক্স, কষ্টিকাম।
তুলনীয় – ক্যালকেরিয়া, সেনেগা, কষ্টিক।
শক্তি – ৩য় থেকে ৬ষ্ঠ শক্তি।
সময়ে সময়ে কোন রোগী সৰ্ব্বদা দেহের সর্বত্র যেন রক্তবহা নাড়ীগুলির মধ্যে একপ্রকার জল ফোটার ন্যায় অনুভব করে। সে ঠান্ডায় অনুভূতিবিশিষ্ট। তাহার বহু রোগ খোলা হাওয়ায় থাকিলে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। তাহার দেহে উত্তাপের ঝলকা উঠে এবং উহা ঘৰ্ম্মে পরিসমাপ্ত হয়। দেহের বহু স্থানে সে ছিন্নকর বেদনা এবং যাতনা অনুভব করে। শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীগুলিতে জ্বালা এবং ছড়িয়া যাওয়ার ন্যায় অনুভূতি। বন্ধনীগুলি প্রসারিত, নচেৎ সঙ্কুচিত। ইহা একটি দীর্ঘক্রিয়া ঔষধ। ইহার বিশ্বাসযোগ্য মানসিক লক্ষণ খুব অল্পই জানা আছে। উদ্বেগ, কোপনতা, ব্যক্তিবিশেষের উপর বিরাগ। মস্তকে স্নায়বিক ও বাতজ বেদনা। মস্তকে ছিন্নকর বেদনা। শঙ্খদ্বয়ে উঁচবিদ্ধবৎ ও ছিন্নকর বেদনা। মস্তক-ত্বকে এবং অন্যত্র চুলকানি। সর্বাঙ্গে হামের ন্যায় উদ্ভেদ। লক্ষণ মিলিলে ইহা চক্ষুর উপপেটকের ছানি আরোগ্য করে। চক্ষুর সম্মুখে হলদে হলদে দাগ দেখে । গোধূলির আলোকে অথবা অস্পষ্ট আলোকে চক্ষুর পাতায় এবং চক্ষুগোলকে জ্বালা। উজ্জ্বল আলোকে চক্ষুর সম্মুখে কুয়াশার মত দেখে। ঠান্ডা হাওয়ায় বেড়াইলে কর্ণে জ্বালা করে। কানে কম শুনে। ডান কানে, গলায় ও কণ্ঠনলীতে সর্দি।
অত্যন্ত হাঁচি, জলবৎ জ্বালাকর স্রাব, তথাপি নাক বুজিয়া থাকে। কণ্ঠনলীতে জ্বালার সহিত সর্দি। ইহা জনশ্রুতি অনুসারে সৰ্দিরোগে বহুব্যবহৃত হইয়াছে। গলক্ষত এবং কণ্ঠনলীর প্রদাহ। এইরূপ রোগের জন্য প্রাচীনকালে একদলা নিশাদল সংগ্রহ করিয়া ছুরি দিয়া চাচিয়া উহার কয়েকটি দানা এক গ্লাস জলের মধ্যে ফেলিয়া দেওয়া হইত। সকলের ভাগ্যে এই একই ঔষধ জুটিত, লক্ষণ-সাদৃশ্য প্রয়োজন হইত না। ইহাতে জ্বর থাকুক আর নাই থাকুক, কতকগুলি রোগী আরোগ্য হইত। এখন আর এই ঔষধকে কেহ গ্রাহ্যের মধ্যে আনে না, কিন্তু ইহার লক্ষণগুলি যত্নের সহিত পাঠ করা উচিত।
ইহার বহু রোগের সহিত মুখের অত্যন্ত বিবর্ণতা থাকে। মুখের হাড়ে ছিন্নকর বেদনা। নিম্ন চোয়ালের এবং কর্ণমূল গ্রন্থিগুলির স্ফীতি ও তৎসহ সূঁচীবিদ্ধবৎ যাতনা। এমন কার্বের ন্যায় মুখে ও ঠোটে জ্বালা ও হাজা। জিহ্বা স্ফীত। ইহা লক্ষণশূন্য গলক্ষতের একটি উপযোগী ঔষধ; কিন্তু যদি স্পষ্ট জ্বালা এবং প্রচুর চটচটে শ্লেষ্মাস্রাব থাকে, ঘাড়ে ও ঘাড়ের গ্রন্থিতে দপদপানি থাকে, মুখমন্ডল অত্যন্ত স্ফীত ও বিবর্ণ হয়, গলার মধ্যে সূচীবিদ্ধবৎ যাতনা থাকে, গিলিতে অত্যন্ত কষ্ট হয়, তাহা হইলে তৃষ্ণা থাকুক আর নাই থাকুক, ইহা আরো বেশী উপযোগী হইবে।
যেরূপ খাদ্য খাওয়া হইয়াছে, তাহার উদ্গার এবং বমন। ক্ষুধার অনুভূতি কিন্তু পেটটি পূর্ণ—ঐ পূর্ণতা বায়ুস্ফীতি। শূন্যতাবোধ, পাকস্থলী ও প্লীহার কামড়ান ব্যথা। উদরে জ্বালাকর, সূঁচীবিদ্ধবৎ, ছিন্নকর বেদনা। বায়ুসঞ্চয়জনিত উদরস্ফীতি। অন্ত্রের মধ্যে যথেষ্ট কলকল শব্দ। কুঁচকি স্থানে অত্যন্ত বেদনা। ঋতুকালে পেটে ও পৃষ্ঠে বেদনা। উদর মোটা, শিথিল এবং ভারি হয় এবং নিম্নাঙ্গগুলি কৃশ হয়। মলত্যাগকালে ও মলত্যাগের পর বহুক্ষণ সরলান্ত্রে এবং মলদ্বারে জ্বালা এবং অবদরণ। মূলাধারে সূঁচীবিদ্ধবৎ ও ছিন্নকর বেদনা। শক্ত মল, ভাঙ্গিয়া ভাঙ্গিয়া পড়ে, নির্গত করা অত্যন্ত কষ্টকর, পেটের পেশীতে চাপ দিতে বাধ্য হয়। ইহার ন্যায় এমোনিয়ার প্রত্যেকটি লক্ষণেই যন্ত্রণাদায়ক অর্শ আছে। মল অন্ত্রের চাঁচুনির ন্যায়, রক্তাক্ত ও
জলবৎ হইলে অথবা প্রাতঃকালে সবুজ পিচ্ছিল হইলে, ইহা উদরাময় আরোগ্য করে। এমন কার্বের ন্যায় ঋতুকালে উদরাময় ও বমন। ইহা মূত্রাশয়গ্রন্থি ও জরায়ুর স্ফীতি আরোগ্য করিয়াছে।
ঋতুস্রাব প্রতিমাসেই নিয়মিত সময়ের পূৰ্ব্বে, তৎসহ পৃষ্ঠে ও উদরে বেদনা। ঋতুপ্রবাহ, অনেকটা এমন কার্বে’র মত কাল এবং চাপ-চাপ। ঋতুকালে কলেরার ন্যায় লক্ষণের সহিত কখন কখন অন্ত্রাদি অথবা সরলান্ত্র হইতে রক্তস্রাব হয়।
জরায়ু হইতে প্রচুর রক্তস্রাব। প্রচুর বৈদনাহীন সাদা প্রদরস্রাব। সর্বপ্রকার উদর এবং ঋতুকালীন উপসর্গের সহিত প্রচুর অধঃবায়ু, পেট-ডাকা এবং উদরশূল থাকে।
এই লক্ষণগুলি বিবর্ণ, রুগ্ন এবং দুর্বল স্ত্রীলোকদিগের ক্ষেত্রেই বেশী দেখা যায়।
সর্দিজ উপদ্রব সূচীবিদ্ধবৎ, ছিন্নকর, জ্বালাকর যাতনার সহিত কণ্ঠনলী ও বায়ুনলীসমূহে বিস্তৃত হইলে ইহা উপযোগী। স্বরভঙ্গ ও স্বরনাশ, তৎসহ কণ্ঠনলীতে জ্বালা। সৰ্ব্বদা কণ্ঠনলী হইতে সাদা শ্লেষ্মা গলায় ঘেঁকারি দিয়া তুলে। বাহুদ্বয় ব্যবহার করিলে অথবা কায়িক পরিশ্রম করিলে কষ্টকর শ্বাসপ্রশ্বাস। উক্ত ঠান্ডা হাওয়ায় বুকের উপর ভার বোধ। গলায় অবিরত সুড়সুড় করিয়া শুষ্ক কাশি। শ্বাসরোধক কাশি প্রত্যহ ঘুরিয়া ঘুরিয়া আসে। প্রত্যহ শুষ্ক কাশি এবং দ্রুত নাড়ী সংযুক্ত দুর্বল ব্যক্তিগণ, যাহারা ক্ষয়কাশের দিকে অগ্রসর হইতেছে, তাহাদের পক্ষে উপযোগী।
কোমরের উপর দিয়া ভীষণ পৃষ্ঠবেদনা, রাত্রিকালে বাড়ে। স্কন্ধদ্বয়ের মধ্যে শীতলতা।
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সূচীবিদ্ধবৎ, টানিয়া ধরার ন্যায়, ছিন্নকর বেদনা। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে টানিয়া ধরার ন্যায় ব্যথা। নিম্ন অঙ্গে পেশী ও বন্ধনীগুলিতে টান ভাব। চলিতে গেলে ঊরুর পশ্চাদ্দিকে টানিয়া ধরার ন্যায় বেদনা। রাত্রিকালে শয্যায় পদদ্বয় শীতল হয়। রাত্রির শেষভাগে প্রচুর নৈশ-ঘৰ্ম্ম। উত্তাপ এবং জ্বরের আবেশ।
পাঠক যদি পরীক্ষাকালে প্রাপ্ত লক্ষণগুলি লন এবং ঐগুলিকে মনোযোগ দিয়া পড়েন, তাহা হইলে তিনি ইহাকে গ্রন্থ-নির্দেশিত পথে ব্যবহার করিতে পারিবেন এবং এসব সম্ভবতঃ গ্রন্থে লিখিত হয় না এরূপ অবস্থাতেও ইহার উপযোগিতা দেখিতে পাইবেন।
অপর নাম – ক্লোরাইড অফ অ্যামোনিয়া (Chloride of Ammonia)
হোমিওপ্যাথি ঔষধার্থে বিচুর্ণ বা অ্যালকোহল দ্বারা প্রস্তুত দ্রব্য ব্যবহৃত হয়।
১। পিঠের স্কন্ধাস্থিদ্বয়ের মধ্যে শীতলতা অনুভব – এই ঔষধের একটি বিশেষ লক্ষণ। এই লক্ষণটি এই ঔষধ প্রয়োগের একটি মূল্যবান সূচক বলে প্রমাণিত হয়েছে।
বক্ষঃস্থলের রোগে, যথা -কাশি বা কাশি ব্যতীত বক্ষবেদনায় সাধারণত এই লক্ষণটি দেখতে পাওয়া যায়। স্কন্ধাস্থিদ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে জ্বালা যেমন লাইকোপোডিয়াম ও ফসফরাস নির্ভরযোগ্য বিশেষ লক্ষণ; এই শীতলতা অনুভবও এমন মিউরের তেমনি বিশেষ লক্ষণ।
২। কোষ্ঠবদ্ধতাতেও এই ঔষধ ব্যবহৃত হয়। কঠিন, শুষ্ক মল ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ে ও অতি চেষ্টায় উহার নিঃসারণ এর প্রধান লক্ষণ। কখনও কখনও কষ্টিকামের মলের ন্যায় ইহা শ্লেষ্মা বা আম জড়ানো হয়। কষ্টিকামের মল শ্লেষ্মা মাখান, চকচকে যেন চর্ব্বি মাখান আছে।
৩। পেশী ও বন্ধনীতেও (ligaments) এই দুটি ঔষধের সাদৃশ্য আছে। এমোন মিউরে বেদনা থাকে এবং ঐ সঙ্গে পেশী সঙ্কুচিত বা ছোট হয়ে গেছে এরূপ অনুভূতি হয়। কষ্টিকাম আরও একধাপ এগিয়ে, সত্য সত্যই পেশীগুলি সঙ্কুচিত হয় এবং বাতজ অঙ্গবিকৃতি বা আথ্রাইটিস ডিফরমানস নামক অবস্থার সৃষ্টি হয় (সাইমেক্স, নেট্রাম মিউর)।
৪। এমোন মিউর ও বোভিষ্টা নামক দুটি ঔষধে ঋতুস্রাব অথবা জরায়ুর স্রাব রাত্রে প্রবাহিত হয়। তবে অন্যান্য লক্ষণ দৃষ্টে এদের নির্বাচন করতে হবে।
পার্থক্য –
ক্রিয়োজোটে স্রাব হয়, কেবল শুয়ে থাকাকালে, উঠলে বা চলে বেড়ালে উহা বন্ধ হয়ে যায়।
লিলিয়াম টিগে স্রাব হয় কেবল চলে বেড়ালে এবং স্রাব বন্ধ হয় চলা বন্ধ করলে;
ম্যাগনেসিয়া কাৰ্ব্বে কেবল রাত্রে অথবা শুয়ে থাকলে স্রাব হয় এবং চলে বেড়ালে বন্ধ হয়।
৫। এমোন মিউর সায়োটিকা রোগে কখন কখন উপকারী। এক্ষেত্রে টেনডন সমূহের ছোট হয়ে যাওয়ার ন্যায় অনুভূতি থাকে এবং রোগী বসে থাকলে যন্ত্রণা বাড়ে, চলে বেড়ালেও যন্ত্রণা বাড়ে কিন্তু শুয়ে থাকলে সম্পূর্ণ উপশম হয়।
এতে গোড়ালিতেও যেন ক্ষত উৎপন্ন হয়েছে, এরূপ বেদনা আছে। গোড়ালির বেদনায় ফাইটোলাক্কা, সাইক্লামেন, ম্যাঙ্গানাম, লিডাম ও কষ্টিকাম ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
আমি একটি বোগীর অত্যন্ত বেদনা ভেলেরিয়ানা দ্বারা আরোগ্য করেছিলাম।
I am text block. Click edit button to change this text. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo.