Recent Post

এন্টিমোনিয়াম ক্রুডাম ANTIMONIUM CRUDUM [Ant-c]

Ant-c অতিরিক্ত খিটখিটে ও খুঁতখুঁতে মেজাজ ও সে সঙ্গে জিহ্বায় দুধের সরের মতো সাদা বা হলদে ময়লা এন্টিম ক্রুডের প্রধানতম লক্ষণ।
Ant-c জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা (Loathing of life)।
Ant-c গুরুপাক দ্রব্য অতি ভোজনের ফলে পাকস্থলীর অসুস্থতা।
Ant-c বমিভাব, আহারে অনিচ্ছা কিন্তু টক খাওয়ার প্রবল ইচ্ছা।
Ant-c ঠান্ডা পানিতে গোসল করে বা রৌদ্র লাগাবার পর অসুস্থতা।
Ant-c পর্যায়ক্রমে উদরাময় ও কোষ্ঠবদ্ধতা।

যে সব শিশু ও যুবকযুবতী মোটা হতে থাকে (ক্যাল্ক-কা); যাদের জীবনীশক্তি নিঃশেষিত তাদের ক্ষেত্রে উপযোগী।

বৃদ্ধ — যাদের খুব ভোরে উদময় হয়; হঠাৎ কোষ্ঠবদ্ধতা আসে, বা পর্যায়ক্রমে উদরাময় ও কোষ্ঠবদ্ধতা হয়, যাদের নাড়ী দৃঢ় ও দ্রুত তাদের ক্ষেত্রে উপযোগী। ঠান্ডায় অত্যানুভূতি; ঠান্ডা লেগে রোগলক্ষণ বাড়ে।

শিশু – অত্যন্ত খিটখিটে ও রাগী; ছোঁয়ালাগা বা তার দিকে তাকালে সহ্য করতে পারে না; গোমড়া মুখ; কারো সাথে কথা বলতে চায় না। বা কেউ তার সাথে কথা বলেও তাও চায় না (এ-টার্ট; আওডি; সাইলি)। আদর করলেই চটে যায় ।

অত্যন্ত বিষণ্নভাব সেই সাথে কাঁদতে থাকে। জীবনে বিতৃষ্ণা, উদ্বিগ্নতা, কাঁদো কাঁদো ভাব, সামান্যতেই অভিভূত (পালস); ভীষণ নিরাশভাব জলে ডুবে মরতে চায় ।

পদ্যের আকারে কথা বলতে ও আবৃত্তি করে বলতে চায়। চাঁদের আলোয় ভাবাবেগ ও স্মৃতিভরা প্রেমভাব জাগে। প্রেমে হতাশা, তার কুফলে (ক্যাল্ক-ফস) প্রযোজ্য ।

নাক ও ঠোঁটের সংযোগস্থলে ক্ষতবৎ ফাটা ফাটা ও মামড়ি পড়ে ।

শিরঃপীড়া — নদীতে স্নানের পরে; ঠান্ডা লেগে; মদ খেলে; হজম না হলে; টক খেয়ে, চর্বিযুক্ত দ্রব্য ও ফল খেয়ে; উদ্ভেদ চাপা পড়ে হলে প্রযোজ্য ।

বেশী খেয়ে হজমের গোলমাল; হজমশক্তি দুর্বল সামান্যতেই হজমের গোলমাল থাকে। জিহ্বার পর পুরু দুধের মত সাদা লেপ-এ ওষুধের সবচেয়ে মূল্যবান লক্ষণ। মুখে জাড়ি ঘা হওয়ায় প্রবণতা (আর্জে-না; সালফ)

টক ও চাটনি খেতে চায় ।

পাকাশয় ও অন্ত্রের গোলমাল-বাড়ে- রুটি ও পিঠা খেলে, টক বিশেষ করে ভিনিগারে, টক ও পচা মদ খেলে, ঠান্ডা জলে স্নানে, শরীর উত্তপ্ত হলে, গরমকালে বহুবছর ধরে নীচে, উপরে বায়ুনিঃসরণ। অজীর্ণ ভুক্তদ্রব্যের স্বাদযুক্ত উদার ।

শ্লেষ্মা – প্রচুর—খকখক করে কাশলে নাকের পেছনদিক হতে শ্লেষ্মা আসে, মলদ্বারে শ্লেষ্মা বার হয়—ঐ শ্লেষ্মা ক্ষতকর, চুইয়ে চুইয়ে পড়ে, কাপড়ে হলদে দাগ লাগে। অর্শ-শ্লেষ্মাস্রাবী ।

চামড়ায় অস্বাভাবিক মাংস হওয়ার প্রবণতা, আঙুলের নখ শীঘ্র বাড়ে না, থেৎলান নখে আঁচিলের মত ফাটা ফাটা হয় শিঙের মত বাড়তে থাকে ।

পায়ের তলায় শিঙের মত কাটাযুক্ত বড় বড় কড়া (র‌্যানানকু-বা)। হাঁটলে ভীষণ যন্ত্রণা বিশেষ করে পাথর দেওয়া রাস্তায় ।

শরীর অত্যন্ত গরম হয়ে গলা বসে যায়। সূর্যের তাপ সহ্য হয় না, রৌদ্রে অতিরিক্ত পরিশ্রমে রোগলক্ষণ বাড়ে (ল্যাকে, নেট-মি); আগুনের সামনে থেকে শরীর গরম হয়ে বাড়ে, গরম আবহাওয়ায় অবসন্ন হয়ে পড়ে বা রোদ লেগে অসুখ হলে প্রযো্জ্য ।

হুপিং-কাশি – বাড়ে-রোদে শরীর অত্যন্ত গরম হলে বা গরম-ঘরে; ঠান্ডা জলে স্নানে ।এ যখন রোগলক্ষণ ফিরে আসে তখন স্থান পালটায় বা একদিক হতে অন্য দিকে সরে যায় ।

ঠান্ডা জলে স্নান করতে চায় না; ঠান্ডা জলে স্নানে বা শরীর ধুলে শিশু : কাঁদতে থাকে। ঠান্ডা জলে স্নানে ভীষণ শিরঃপীড়া দেখা দেয়-ঋতুস্রাব বন্ধ হয়। সাঁতার কাটলে বা জলে পড়লে সর্দি-কাশি লাগে (রাস-ট)।

সম্বন্ধ – স্কুইলা-র অনুপূরক ।

ব্রায়ো, ইপি, লাইকো, পালস এর সমগুণ পাকাশয়ের গোলমালে। পালস; মার্ক, সালফের পর ভাল কাজ করে ।

বৃদ্ধি – খাওয়ার পরে, ঠান্ডা জলে স্নান করলে, টক বা টকমদ খেলে, সূর্যতাপে বা আগুনে শরীর গরম হলে; পেশী ঠান্ডা বা বেশী গরমে ।

উপশম — খোলা হাওয়ায়, বিশ্রাম করলে, গরমজলে স্নানের পরে ।

শক্তি – ৬, ৩০,  ২০০ হইতে উচ্চশক্তি ।

হোমিওপ্যাথিক নিয়মানুসারে এই ঔষধ ব্যবহার করতে হলে, ঔষধটির মানসিক ও পরিপাক ক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লক্ষণগুলির উপর নির্ভর করে ঔষধটি নির্বাচন করা হবে।

প্রচণ্ড মানসিক উত্তেজনা ও খিটখিটে স্বভার, এইগুলির সঙ্গে জিহ্বা সাদা, পুরু লেপ যুক্ত, এই লক্ষণগুলি, যে সকল রোগে ঔষধটি দেওয়া হবে, সেই সকল ক্ষেত্রে ঔষধটি নির্বাচনের মূল নির্দশিকা। সকল অবস্থা গরমে এবং ঠাণ্ডা স্নানে বৃদ্ধি পায়। কিছুতেই সূর্যের উত্তাপ সহ্য হয় না। মেদ যুক্ত হবার প্রবণতা। যেসব ক্ষেত্রে যন্ত্রণা থাকবে বলে অনুমান করা হয়, সেই সব স্থানে যন্ত্রনার অনুপস্থিতি। গেঁটে বাত, তৎসহ পরিপাক ক্রিয়া সংক্রান্ত উপসর্গ।

মন – নিজের ভবিষ্যত সম্বন্ধে অধিক চিন্তিত। খিটখিটে ও প্রতিবাদ প্রবণ। যা কিছুই করা হোক না কেন তাকে কিছুতেই সন্তুষ্ট করা যায় না। গোমড়া মুখ করে থাকে, কথা বলতে ইচ্ছা করে না। খিটখিটে, বিনা কারণে রেগে যায়। শিশু কিছুতেই স্পর্শ সহ্য করতে পারে না অথবা কেহ ওর দিকে তাকালে বিরক্ত হয়। কেউ তার দিকে সামান্য নজর করলে রেগে যায়। আবেগতাড়িত মানসিকতা।

মাথা – বেদনা, মাথার চাঁদিতে, উপরের দিকে উঠার সময়, স্নান করলে, পরিপাক ক্রিয়ার গোলযোগ থেকে মাথার যন্ত্রনা, বিশেষত মিশ্রি খাওয়ার পর বা অম্লজাতীয় পানীয় পান করার পর। উদ্ভেদ চাপা পড়ার কুফল। কপালে ভারবোধ তৎসহ মাথাঘোরা, বমিবমি ভাব, এবং নাক দিয়ে রক্তস্রাব। মাথার যন্ত্রণা তৎসহ অত্যধিক মাথার চুল ওঠে।

চোখ – ম্লান, কোটরগত, লাল, চুলকানিযুক্ত, প্রদাহিত, চোখ জুড়ে যায়। চোখের কোনগুলি কাঁচা মাংসের ন্যায় ফাটা। পুরাতন ব্লেফারাইটি বা পুরাতন অক্ষিপত্র-প্রদাহ। চোখের তারায় ও চোখের পাতা বা অক্ষিপত্রে পুঁজযুক্ত উদ্ভেদ।

কান — লালবর্ণযুক্ত, স্ফীত, কর্ণনলীর বেদনা। কানের ভিতর ঝিঁ ঝিঁ শব্দ ও বধিরতা। কানের ভিতর রসযুক্ত উদ্ভেদ।

নাক – নাসারন্ধ্র ফাটা ও মামড়ি দ্বারা ঢাকা, নাসারন্ধ্রর একজিমা, ক্ষতযুক্ত, ফাটা ও মরামাস যুক্ত।

মুখমণ্ডল – মুখে ফুস্কুড়ি, পুঁজযুক্ত উদ্ভেদ, ও ছোট ছোট ফেঁড়া। গালে হলুদ রংঙের মামড়ি যুক্ত উদ্ভেদ ও চোয়ালে। মুখমণ্ডল ফ্যাকাশে ও চোখ বসে যাওয়া চাহনিযুক্ত চেহারা।

মুখগহ্বর — মুখের কোনগুলি ফাটা। ঠোঁট শুষ্ক। লবনাক্ত স্বাদ যুক্ত লালা। প্রচুর পিচ্ছিল শ্লেষ্মা। জিহ্বা সাদা পুরু লেপযুক্ত, যেন চুনকাম করা হয়েছে বলে মনে হয়। মাড়ী দাঁতগুলি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সহজেই রক্তপাত হয়। ফোঁপড়া দাঁতে বেদনা। তালু হেজে যায়, তৎসহ প্রচুর শ্লেম্মা স্রাব। পচা ঘা। তৃষ্ণাহীনতা। মুখ গহবেরের চারপাশে, হওয়া একজিমা।

গলা – নাসারন্ধ্রের পিছন দিক থেকে প্রচুর, হলুদ রঙের শ্লেষ্মা বেরিয়ে থাকে। মুক্ত

বাতাসে কাশি। কণ্ঠনালীর প্রদাহ কণ্ঠনালীর অতি ব্যবহারে, কর্কশ কণ্ঠস্বর।

পাকস্থলী — খিদে কমে যায়। অম্ল ও আচার খাবার ইচ্ছা। সন্ধ্যায় এবং রাত্রিতে পিপাসা। ভূক্ত খাদ্যের স্বাদযুক্ত ঢেকুর। বুক জ্বালা, বমি বমি ভাব, বমি। শিশু স্তন্যপান করার পর, পান করা দুধ দইয়ের মত চাকা চাকা বমি করে তোলে এবং এরপর শিশু আর স্তন্য পান করতে চায় না, এবং শিশু অত্যন্ত খিটখিটে। রুটি, প্যাষ্ট্রি বা পিষ্টক, অম্ল খাদ্যবস্তু, অম্ল মদ, ঠাণ্ডা জলে স্নান, অতিরিক্ত গরম লাগান গরম আবহাওয়া প্রভৃতি কুফলে পাকাশয়ের গোলযোগ দেখা দেয়। নিরন্তর ঢেকুর তোলা। গেঁটে বাত পাকস্থলী

ও অন্ত্রে স্থানান্তরিত হয়। মুখের ভিতর মিষ্টি স্বাদযুক্ত জল উঠে। খাবার পর পেট ফেঁপে উঠে।

মল – মলদ্বারে চুলকানি। (সলফো ক্যাল্ফ, অ্যালুমিনা)। পর্যায়ক্রমে উদরাময় ও কোষ্ঠকাঠিণ্য বিশেষতঃ বৃদ্ধ ব্যক্তির। অম্নখাদ্য বস্তু, অম্ল মদ পানের পর, স্নানের পর, অতিরিক্ত উত্তাপ লাগানোর পর উদরাময়। মল পিচ্ছিল, তৎসহ মলত্যাগকালে বায়ু নিঃসরণ। শ্লেষ্মাযুক্ত অর্শ, নিরন্তর শ্লেম্মা ছুঁয়ে ছুঁয়ে আসে। জলের মত উদরাময়ের সঙ্গে শক্ত মলের দলা। শ্লেষ্মাস্রাবযুক্ত মলদ্বার প্রদাহ। মল শ্লেষ্মাময়।

প্রস্রাব – বারে বারে প্রস্রাব তৎসহ জ্বালাকর অনুভূতি এবং কোমরে ব্যথা, প্রস্রাব ঘোলাটে এবং দূর্গন্ধযুক্ত।

পুরুষের রোগ — অণ্ডকোষে উদ্ভেদ এবং যৌনাঙ্গের চারিপাশে। ধবজভঙ্গ, লিঙ্গ ও অণ্ডদ্বয় শুকিয়ে যায়।

স্ত্রীরোগ – উত্তেজিত স্থানগুলি চুলকায়। ধাতুস্রাব শুরুর আগে, দাঁতের যন্ত্রণা, ধাতুস্রাব নির্দিষ্ট সময়ের অনেক আগে এবং প্রচুর পরিমানে স্রাব নির্গত হয়। ঠাণ্ডা জলে স্নান করার ফলে ধাতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। তৎসহ পেলাভ স্থানে চাপবোধ ও ডিম্বাশয় স্থানে হাত দিয়ে চাপ দিলে ব্যথা লাগে। জলের মত সাদা স্রাব, হাজাকর, দলা-দলা।

শ্বাস-প্রশ্বাস – গরম ঘরে প্রবেশ করলে কাশির বৃদ্ধি, তৎসহ বুকের ভিতর জ্বালাবোধ, বুকের মধ্যে চুলকানি, চাপবোধ। অতিরিক্ত গরম লাগানোর ফলে স্বরভঙ্গ। কর্কশ স্বর এবং স্বরভঙ্গ।

পিঠ – ঘাড়ে ও পিঠে চুলকানি ও যন্ত্রনা।

অঙ্গপ্রত্যঙ্গ — পেশীর নর্তন। বাহুতে ঝাকুনি। হাতের আঙ্গুলে বাতের মত বেদনা। নখ ভঙ্গুর, নখ বিকৃত অবস্থায় বেড়ে থাকে। পায়ের তলায় ও হাতে শৃঙ্গের মত শক্ত আঁচিল। লেখার সময় হাতের দুর্বলতা তৎসহ হাত কাঁপে এবং এরপর দূর্গন্ধযুক্ত বায়ু নিঃসরণ। পায়ের পাতায় তীব্র ব্যথা, শৃঙ্গের মত শক্তস্থানে ঢাকা। প্রদাহিত কড়া। গোড়ালির বেদনা।

চামড়া – একজিমা তৎসহ পাকাশয়িক গোলযোগ। ফুস্কুড়ি, ফোস্কা ও পুঁজ উদ্ভেদ। ঠাণ্ডা জলে স্নান সহ্য হয় না। পুরু, শক্ত, মধুরঙের মামড়ি যুক্ত। হামের মত উদ্ভেদ। বিছানায় শোবার পরে চুলকানি। চর্মশুষ্ক, আঁচিল। (থুজা, স্যাবাইনা, কষ্টিকাম) শুষ্ক গ্যাংগ্রীন। আঁশের মত মামড়িযুক্ত পুঁজ পূর্ণ উদ্ভেদ তৎসহ জ্বালা এবং চুলকানি, রাত্রিতে বৃদ্ধি।

ঘুম – বৃদ্ধ ব্যক্তিদের একাদিক্রমে ঝিমুনিভাব।

জ্বর — গরম ঘরে থাকলেও শীত করে। সবিরাম জ্বর তৎসহ বিরক্তি, বমি বমিভাব, বমি, ঢেকুর, লেপযুক্ত জিহ্বা, পাতলা মল। গরম ঘাম।

কমা বাড়া বৃদ্ধি – সন্ধ্যায়, গরমে, অম্লে, মদে, জলস্পর্শে এবং ধোয়ার কাজ করলে। ভিজে পুলটিস ব্যবহারে বৃদ্ধি।

কমা – মুক্ত বাতাসে, বিশ্রামের সময়, ভিজে স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায়।

সম্বন্ধ — তুলনীয় অ্যান্টিমোনিয়াম ক্লোরিডাম। বাটার অফ অ্যান্টিমোনি। ক্যানসার রোগের একটি ঔষধ। শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী ধবংস হয়ে যায়। থেতলিয়ে যাওয়া চামড়া ঠাণ্ডা ও চটচটে। শরীরের শক্তি হীনতার ফলে প্রচণ্ড দুর্বলতা। শক্তি – ৩য় বিচূর্ণ।

অ্যান্টিমন আয়োড্যাট (জরায়ুর রক্তাধিক্য, হিউমিড এ্যাজমা। নিউমোনিয়া ও ব্রঙ্কাইটিস, শরীরের শক্তি কমে যাওয়ায় ও ক্ষুধা কমে যাওয়া। হলুদবর্ণের চামড়া, ঘামযুক্ত, নিস্তেজ ও ঝিমুনি ভাব। সাব-অ্যাকিউট ও পুরাতন বুকের ঠাণ্ডা লাগা, যা মাথা থেকে নীচের দিকে নেমে শ্বাসনলীতে পৌঁছায়, শক্ত, খুকখুকে কাশি তৎসহ বুকের ভিতর সাঁই সাঁই শব্দ এবং শ্লেষ্মা তুলে ফেলতে পারে না। বিশেষত বৃদ্ধ ও দুর্বল ব্যক্তিরা ব্যাকমিস্টার। নিউমোনিয়া রোগ ধীরে ধীরে আরোগ্য লাভ করলে, এই ঔষধ কাজ করে।

তুলনীয় – কারমেস মিনারেল স্টিবিয়েট সালফ রুব।(ব্রঙ্কাইটিস) এছাড়াও পালস, ইপিকাক, সালফার।

সদৃশ – সালফার।

দোষঘ্ন – হিপার।

শক্তি – ৩য় থেকে ৬ষ্ঠ শক্তি।

এই পদার্থটির সম্পূর্ণ পরীক্ষা করিবার সময় তোমরা বিস্মিত হইয়া লক্ষ্য করিবে যে, ইহার সমস্ত লক্ষণই পাকস্থলীতে কেন্দ্রীভূত। সে কিরূপ রোগে ভুগিতেছে, তাহাতে কিছু আসে যায় পাকস্থলী উহাতে যোগ দিবেই। বেদনায় তাহার পাকস্থলী পীড়িত হয়, বমি বমি ভাব দেখা দেয়, শিরঃপীড়ার সহিত সে পাকস্থলীতে যাতনা বোধ করে। সব রোগের সহিত তাহার পাকস্থলী বিশৃঙ্খল হয় এবং অপর পক্ষে যখনই তাহার পাকস্থলী পীড়িত হয়, তখনই সে সর্বাঙ্গে পীড়িত হইয়া পড়ে। যে-সকল রোগ পাকস্থলীর মধ্য দিয়া আত্মপ্রকাশ করে, প্রায়শঃই এই ঔষধ তাহাতে প্রয়োজন হয়।

কিরূপ ধাতুতে এই ঔষধের প্রয়োজন হওয়া সম্ভব, তাহার পরিচালক মানসিক লক্ষণগুলি সৰ্ব্বপ্রথমে প্রয়োজন। ইহা মনের একটি সাঙ্ঘাতিক অবস্থা উৎপাদন করে, সে আর বাঁচিয়া থাকিতে চায় না। চিকিৎসকের বেশ জানা আছে যে, রোগীর যদি বাঁচিবার ইচ্ছা না থাকে, সে যদি জীবনকে একটি বোঝা বলিয়া মনে করে, তাহা হইলে রোগটি সাঙ্ঘাতিক। যখন আমি কোন রোগীকে বলিতে শুনি, “ও ডাক্তার, আমি যদি কেবল মরিতে পারিতাম,” তখন! আমার রোগীটিকে পছন্দ হয় না, কারণ তাহার শরীর বিধানে কোন গভীর-মূল গোলযোগ আছে, যাহা দূর করা দুঃসাধ্য। এরূপ ক্ষেত্রে ভীতিপ্রদ কিছু থাকে এবং যখন তাহা উপস্থিত হয়, তখন সাধারণতঃ রোগীকে মরিতেই দেখা যায়। “জীবনে বিতৃষ্ণা।” তোমরা ইহা সাধারণতঃ দুষ্ট প্রকৃতির, দীর্ঘকালস্থায়ী একজ্বরে, যথা—টাইফয়েড জ্বরে দেখিতে পাইবে। এই ঔষধে টাইফয়েড জ্বরের সমস্ত অবসন্নতা আছে এবং ইহার জ্বর একটানা প্রকৃতির, অবশ্য স্বল্পবিরাম ও সবিরাম জ্বরও দেখা যায়। ইহার অবসন্নতা আর্সেনিকামের সদৃশ কিন্তু আর্সে’ প্রবল মৃত্যুভয় থাকে এবং ইহাতে থাকে জীবনে বিতৃষ্ণা, সুতরাং ইহারা একে অন্যের সমলক্ষণ নহে। আর্সে’ অত্যন্ত অস্থিরতা আছে, কিন্তু ইহাতে কদাচিৎ অস্থিরতা দেখা যায়। আর্সে’ প্রবল তৃষ্ণা থাকে, কিন্তু এই ঔষধ তৃষ্ণাশূন্য। সুতরাং যদিও এই দুই ঔষধে একজ্বরের সহিত অতিরিক্ত অবসন্নতা আছে, তথাপি আমরা দেখিতে পাই যে, উভয়কে পৃথক করিবার মত যথেষ্ট বিসদৃশ লক্ষণও আছে। যৌবনোন্মুখ বালিকাগণের যাহাদের হরিৎপান্ডুরোগ হইবার ভয় আছে, তাহাদের এরূপ টাইফয়েড জ্বর সময়ে সময়ে দেখা যাইবে । তাহাদেরও জীবনে বিতৃষ্ণা থাকে, কিন্তু উহা হিষ্টিরিয়াজাত। বিশেষ বিশেষ সময়ে অত্যন্ত অবসন্নতা, হঠাৎ দুৰ্বলতা এবং মূর্হার আক্রমণ দেখা দেয়। ইহার সহিত সাধারণতঃ তোমরা আর একটি লক্ষণ দেখিতে পাইবে, উহা একই সময়ে উপস্থিত হয় না, কিন্তু পূর্বোক্ত লক্ষণের সহিত পর্যায়ক্রমে আসে অথবা কেবলমাত্র সময়ে উপস্থিত হয়; লক্ষণটি, যথা—এই সকল অতি উত্তেজনাপ্রবণ, ব্যাকুলচিত্ত, হিষ্টিরিয়াগ্রস্ত, ভাবপ্রবণ যুবতী, ও স্ত্রীলোকেরা রঙ্গীন কাচযুক্ত জানালা দিয়া যেরূপ স্নিগ্ধ আলো পড়ে অথবা সন্ধ্যাকালে চাঁদ হইতে যেরূপ স্নিগ্ধ আলো বাহির হয় তাহাতে বিচলিত হইয়া পড়ে। পাঠ্যপুস্তকে যে “চন্দ্রালোকে আবেগপ্রবণতা” বলা হয়, তাহার অর্থ ইহাই। ইহা একটি হিষ্টিরিয়াসম্ভব অবস্থা আবেগের বিশৃঙ্খল অভিব্যক্তি; এইরূপ আবেগ একমাত্র যে ব্যক্তি পীড়িত তাহার মধ্যে অথবা যে ব্যক্তির সাধারণ স্নায়ুমন্ডল অসামঞ্জস্যযুক্ত তাহার মধ্যেই দেখা দিতে পারে। এই প্রকারের রোগী আমাদের নিকটে এন্টিমক্রুডের মানসিক অবস্থা এবং ধাতুগত প্রকৃতি প্রকাশিত করে এবং এইরূপ মানসিক অবস্থার সহিত দৈহিক লক্ষণগুলি ঠিক যেন পাকস্থলীকেই আক্রমণ করিয়া বসে।

আমরা এই ঔষধের মধ্যে বারবার একটি বিশেষ সাধারণ লক্ষণ পাই, উহা তোমাদিগকে মনে রাখিতে হইবে। লক্ষণটি গেঁটেবাত রা বাত অবস্থা; উহাতে লক্ষণগুলি আবহাওয়ার পরিবর্তনের সাথে সাথে বদলাইয়া যায়, ঠান্ডায়, ভিজে আবহাওয়ায় বাড়ে, ঠান্ডা জলে স্নান করিলে বাড়ে, উষ্ণজলে স্নানের উত্তাপে কমে, অম্ল মদ খাইলে বাড়ে, যে-কোন প্রকার উত্তেজক দ্রব্যে বাড়ে। যখন তোমরা “মদ হইতে বৃদ্ধি” এই উক্তিটির ব্যবহার পাও, তখন মাত্র এইটুকু জানিলেই যথেষ্ট হইবে না যে, মদ খাইলে রোগী খারাপ বোধ করে, কিন্তু আরও মনে করিতে হইবে—রোগীর রোগ-লক্ষণগুলিও মদ খাইলে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। রোগী সহজেই মাতাল হইয়া পড়ে, কিন্তু তাহার মানসিক লক্ষণ অপেক্ষা শারীরিক লক্ষণগুলিই অধিক উদ্ৰিক্ত হয়; তাহার গেঁটেবাতের লক্ষণ মদ খাইলে বাড়ে। দেহের সর্বপ্রকার বেদনা ও কনকনানি মদ খাইলে বাড়ে, এই কারণে শিরঃপীড়া দেখা দেয় এবং পাকাশয়িক উপদ্রবসমূহ মদ খাইলে অত্যন্ত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়।

এরূপ রোগী রাত্রে খারাপ হয়, ভিজা আবহাওয়ায় খারাপ হয়, ভিজা ঠান্ডায় খারাপ হয়, চুপ, করিয়া শুইয়া থাকিলে ভাল থাকে; উষ্ণ সেক দিলে ভাল থাকে, কিন্তু অতিরিক্ত উত্তাপে, বিকীর্ণ উত্তাপে এবং গরম ঘরে অত্যন্ত খারাপ হয়। সূর্যের রশ্মি ও খোলা উনানের উত্তাপে অনেকগুলি উপসর্গ উপস্থিত হয়। খোলা আগুন এন্টিম ক্রুডের রোগীর পক্ষে বিশেষ বিরোধী। হুপিং কাশিযুক্ত শিশু আগুনের দিকে চাহিলে আরও বেশী কাশিতে থাকে। এইসব ব্যাপার অদ্ভুত। ইহারা এতই অদ্ভুত যে ইহাদিগকে ব্যাখ্যা করিবার মত কোন দার্শনিক অনুমান নাই, বুঝাইয়া দিবার মত কোন সিদ্ধান্ত নাই। কিন্তু তবু এইগুলি প্রকৃত ব্যাপার এবং আমাদিগকে এইগুলি গ্রহণ করিতে হইবে।

এইরূপ রোগীর সমুদয় গেঁটেবাতের লক্ষণ এত দ্রুত অন্তর্হিত হয় যে, তুমি ভাবিয়া বিস্মিত হইবে যে, এই অধিকতর বাহ্যিক লক্ষণগুলি গেল কোথায়; কারণ অকস্মাৎ একদিন বা একরাত্রির মধ্যে রোগী বমি করিতে আরম্ভ করিবে; তুমি দেখিবে এরূপ বমন দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরিয়া চলিতে থাকিবে, যতদিন না গেঁটেবাতের লক্ষণগুলি হস্ত-পদাদিতে ফিরিয়া আসে। ইহা সত্যই আশ্চর্যের বিষয় যে, প্রাচীনদের ভাষায় “রোগান্তরপ্রাপ্তি” অর্থাৎ রোগ , একস্থান হইতে আর এক স্থানে চলিয়া যাওয়া, কত শীঘ্র উপস্থিত হয়। গেঁটে বাত রোগ হঠাৎ হস্ত-পদাদি হইতে অন্তর্হিত হয় এবং পাকাশয়িক লক্ষণসমূহ দেখা দেয়। ইচ্ছা করিলে তোমরা ইহাকে পাকস্থলীর বাতও বলিতে পার।

এই ঔষধে সর্দিজ লক্ষণ আছে, নাসিকা, পাকস্থলী, সরলান্ত্র প্রভৃতির সর্দি এবং অম্ল মদ্যপানে অথবা ঠান্ডা লাগায় ঐ সকল স্থানের যে-কোনটি হইতে বর্ধিত শ্লেষ্মাস্রাব। এই সর্দির, একটি কষ্টকর লক্ষণ রাত্রে নাক বুজিয়া যাওয়া। যেই সে কোন গরম ঘরে যায় অমনি তাহার নাক বুজিয়া যায়। এই সর্দির পুরাতন হইবার প্রবণতা থাকে, কারণ রোগীর রক্তসঞ্চালন ক্ষীণ এবং ধাতু দুর্বল। যখন ইহা পুরাতন আকার ধারণ করে তখন ইহা রাত্রে বাড়ে এবং তৎসহ শিরঃপীড়া, থাকে। যেমনই সর্দি কম পড়ে এবং শুকাইয়া যায়, সঙ্গে সঙ্গে শিরঃপীড়া বাড়িতে থাকে। তাহার মস্তকে স্নায়ুশূল দেখা দেয়, পাকস্থলীতে, বমনের সহিত পেষণবৎ বেদনা ও ভয়ানক অস্বস্তি উপস্থিত হয়। তাহার মাঝে মাঝে সবমন শিরঃপীড়া দেখা দেয়, পরিবারের  লোকেরা উহাকে পেট গরম হইয়া, সবমন শিরঃপীড়া বলিবে; কিন্তু যে অবস্থার কথা বলিলাম, তাহা ঠান্ডা লাগার ফলে উপস্থিত হয়, ঘন সর্দিস্রাব কম হইয়া নাকের শুষ্কতা উৎপন্ন করে; এবং গৃহীত বায়ু নাককে আগুনের ন্যায় জ্বালাযুক্ত করে। কখন কখন প্রবল বমনের আক্রমণের পর। এইসব উপদ্রব চলিয়া যায়, আবার কখন কখন তাহা হয় না, কিন্তু শিরঃপীড়াটি বহুদিন যাবৎ থাকিয়া যায়, বমনে উহার উপশম হয় না অথবা দীর্ঘকাল বমনের পর উপশম হয়। বহু ঔষধে শিরঃপীড়া আছে এবং ঐগুলিতে বমন করিলেই রোগী ভাল বোধ করে, কিন্তু এই ঔষধে রোগী অনেকক্ষণ ধরিয়া বমন করে এবং শিথিল ও অবসন্ন হইয়া পড়ে। শিরঃপীড়া নড়াচড়ায় বাড়ে, রাত্রিকালে বাড়ে, শুইয়া থাকিলে, চুপ করিয়া থাকিলে কমে, খোলা বাতাসে কমে, গরম ঘরে বাড়ে, অতিরিক্ত উত্তপ্ত হইলে বাড়ে, বিকীর্ণ উত্তাপে এবং আলোকে বাড়ে। এখন তুমি দেখিলে যে, সর্দি, শিরঃপীড়া ও পাকাশয়িক লক্ষণগুলি কিভাবে একত্রে গ্রথিত রোগীর বিশেষ অসুখ করিয়াছে বলিয়া তুমি উহার লক্ষণগুলি পৃথকভাবে লইতে পার না। তোমাকে সমগ্র লোকটির জন্য ঔষধ ব্যবস্থা করিতে হইবে।

শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী সংক্রান্ত আর একটি লক্ষণ আছে এবং উহা বিশেষ মূল্যবান। এই সকল ঝিল্লীগুলির একপ্রকার দুধের মত সাদা নিঃস্রাব বা স্তর সৃষ্টি করার প্রবণতা আছে এবং উহা জিহ্বার উপরেই বিশেষভাবে দেখা যায়। সমগ্র জিহ্বাটি একটি দুধের ন্যায়, সাদাস্তরে আবৃত। এই লক্ষণটি তোমরা এই ঔষধ প্রয়োগ করিবার মত সব রোগেই দেখিতে পাইবে। শিশুদিগের পাকস্থলীর গোলযোগে, পেট গরম হইয়া জ্বরে, জ্বর এবং অত্যন্ত বমনসংযুক্ত যে-কোন রোগে, সমগ্র স্নায়ুমন্ডলের অত্যন্ত উত্তেজনা এবং পাকস্থলীর উপদাহ সংযুক্ত টাইফয়েড রোগে জিহ্বা সাদা দেখাইবে। সামান্য মাত্র উত্তেজনায় তাহার উকি উঠিবে এবং গা বমি বমি করিবে। সবকিছুতেই যেন সে বিরক্ত হইয়া উঠিবে। তাহার খাদ্যে অনিচ্ছা খাদ্যের চিন্তা ও খাদ্যের গন্ধও তাহার নিকট বিরক্তিকর। আর্সেনিকের সদৃশ লক্ষণ।

সে শুইতে যাইবার পূৰ্ব্বে রাত্রে ঠান্ডা জলে স্নান করিল, পরদিন প্রাতঃকালে সে স্বরহীন হইয়া উঠিবে, একটি কথাও বলিতে পারিবে না। এই অবস্থা দৃশ্যতঃ বেদনাশূন্যভাবে উপস্থিত হয়, প্রাতঃকালে কথা বলিবার চেষ্টা করার পূর্বে সে ইহা জানিতেও পারে না। ইহা কণ্ঠনলীর আক্ষেপ ও গলা চাপিয়া ধরার ন্যায় অনুভূতির সহিত উপস্থিত হইতে পারে। সর্দি, কখন কখন, গলায় ও কণ্ঠনলীতে নামিয়া গিয়া ব্রঙ্কাইটিস অথবা নিউমোনিয়ার সৃষ্টি করিতে পারে।

ক্রমশঃ হ্রাসপ্রাপ্ত আবেশ বিশিষ্ট শুষ্ক, খকখকে, আক্ষেপিক কাশি। আমি উহা বুঝাইয়া দিতেছি। বেশীক্ষণ স্থায়ী হউক আর অল্পক্ষণ স্থায়ী হউক; কাশির প্রথম ধমকটি অত্যন্ত তীব্রভাবে আসিয়া সমগ্র দেহকে কাঁপাইয়া তুলিবে; ইহার পরের ধমকটির তীব্রতা অপেক্ষাকৃত কম হইবে, তারপরের ধমকটির তীব্রতা আরও কম হইবে, এইভাবে সম্ভবতঃ ডজন খানেক অথবা আরও কম সংখ্যক ক্রমশঃ কম তীব্র ধমক আসার পর, আর ধমক নয়, শুষ্ক খকখকে কাশিতে আক্রমণটি শেষ হইবে। ব্রঙ্কাইটিস হউক, আর হুপিং কাশিই হউক, যদি প্রথম কাশির ধমকে সারা দেহটি আলোড়িত হয় এবং জিহ্বাটি সাদা থাকে, আর অল্পবিস্তর পাকাশয়িক গোলযোগ থাকে, তাহা হইলে এন্টিম ক্রুডই ঔষধ। ইহা তৎক্ষণাৎ রোগীর সমস্ত অবস্থাটি বদলাইয়া দিবে। অবশ্য কাশির প্রচন্ডতার জন্য বুকের ক্ষতবৎ বেদনা, খঞ্জতা বোধ ও তেঁৎলান ভাবটি থাকিয়া যাইবে।

পাকস্থলীর লক্ষণগুলি বিশেষভাবে বিবেচনা করিতে হইবে। অবিরত বমনেচ্ছা, পাকস্থলীতে ভারবোধ, কিছু না খাইলেও মনে হয় যেন পাকস্থলীটি অতিপূর্ণ আছে, যেন সে অতিরিক্ত খাইয়াছে। যদিও পাকস্থলীটি স্ফীত বোধ হয়, তথাপি উদরগহ্বরটি সমতলই থাকে। সে স্ফীতি বোধ করে, এবং পাকস্থলীর আধেয় বমি করিয়া ফেলে। দীর্ঘকালস্থায়ী উকি উঠা, বমিবমি ভাব, পাকস্থলীতে কষ্টকর বোঝার অনুভূতি; এই ভাব ক্রমাগত চলিতে থাকে। বমিতে উপশম হয় না। বরং অবসন্নতা বাড়িতে থাকে।

যকৃতের অথবা উহার কোন অংশের প্রদাহ ও কঠিনতা। পিত্তকোষ-প্রদেশে বেদনা। যকৃৎস্থানে অত্যন্ত বেদনা, যকৃতে বিদীর্ণকর, ছিন্নবার বেদনা। সময়ে সময়ে ইহার সহিত ন্যায় লক্ষণ সংযুক্ত থাকে।

উদরে আমরা অনেকগুলি লক্ষণ পাই। তীব্র উদরবেদনা, জ্বালা, অত্যন্ত স্ফীতি। মনে হয়, যেন ফাঁপটি ক্রমেই বাড়িয়া চলিয়াছে; মনে হয়, যেন একটি স্ক্রু ক্রমশঃ ভিতরে ঢুকিয়া গিয়া ফাঁপটিকে বাড়াইয়া তুলিতেছে। আমরা এই অবস্থা টাইফয়েড জ্বরের উদরস্ফীতি দেখিতে পাই, আমরা ইহা বায়ুস্ফীতিতে দেখিতে পাই; গ্রীষ্মকালীন উদরাময়ে দেখিতে পাই। এইরূপ রোগের সহিত পাকাশয়িক লক্ষণ এবং জিহ্বার সাদা বর্ণ বর্তমান থাকে; বিশেষতঃ যদি রোগীটি গেঁটেবাত গ্রস্ত হয়, তাহার আক্রমণটি যদি অম্ল মদ্যপান অথবা ঠান্ডা জলে স্নানের জন্য দেখা দিয়া থাকে এবং যদি তাহার হাতে আঙ্গুলের সন্ধির গুটিগুলি বেদনাশূন্য হইয়া পাকস্থলী ও অন্ত্রাদি স্ফীত ও বেদনান্বিত হইয়া থাকে।

এই ঔষধের একপ্রকার বর্ণনা করা যায় না এরূপ উদরাময় আছে, আর ডেলা ডেলা এবং তরল মল মিশ্রিত উদরাময় আছে। অম্ল মদ খাইয়া উদরাময়। মলভান্ড খালি হইতে অনেক সময় লাগে বলিয়া মনে হয়। সে তাড়াতাড়ি মলত্যাগ করিতে যায় এবং কিছু ডেলা এবং কিছু তরল মলত্যাগ করে এবং শীঘ্রই  আবার তাড়াতাড়ি মলত্যাগ করিতে যায় এবং আবার কিছুটা ডেলা ও কিছুটা তরল মল নির্গত হয়। গ্রীষ্মকালীন উদরাময়ে এইরূপ চলিতে থাকে, যতক্ষণ না মলভান্ড খালি হইয়া কোথানি দেখা দেয়। এইরূপ উদরাময়ের পরিসমাপ্তি হয় আমাশয় রোগে, তখন অত্যন্ত কোথানি, দীর্ঘকাল ধরিয়া মলত্যাগের চেষ্টা এবং অত্যন্ত অবসন্নতা দেখা দেয়। পুরাতন গেঁটেবাত ধাতু ব্যক্তির অর্শরোগ। উহা ঠান্ডা হইতে, ভিজা দিনে, ঠান্ডা জলে স্নানে এবং যদি রোগী বোকার মত অম্ল মদ্য অথবা অম্ল খাদ্য খায়, তাহা হইলে বেদনাযুক্ত ও প্রদাহিত হইয়া উঠে। রোগীর পাকস্থলী, অন্ত্র, সরলান্ত্র ও অর্শসম্বন্ধীয় উপদ্রব অম্ল মদ, অম্ল ফল অথবা, দুম্পাচ্য খাদ্য খাইলে অথবা ঠান্ডা জলে স্নান করিলে এবং ভিজা আবহাওয়ায় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়।

বস্তিগহ্বরের যন্ত্রাদি, বিশেষতঃ স্ত্রীলোকদিগের, অত্যন্ত শিথিল হইয়া পড়ে; এত শিথিল হয় যে বস্তিগহ্বরের নীচের দিকে এক প্রকার আকর্ষণ অনুভূত হয়। মনে হয়, যেন বস্তিগহ্বরের আধেয় নির্গত হইবে এবং খসিয়া পড়িবে। এই ঔষধে জরায়ু নির্গমন এবং প্রদরের ন্যায় এক প্রকার স্রাব আছে। ঋতুকালে নানাপ্রকার উপদ্রব দেখা দেয়। ডিম্বকোষদ্বয়ের উত্তেজনা ও বেদনা, যেমনটি আমরা হিষ্টিরিয়াগ্ৰস্তা নারীর, যাহারা অতৃপ্ত ভালবাসার জন্য কষ্ট পায়, তাহাদের এবং কল্পনাময়ী স্ত্রীলোকগণের ক্ষেত্রে দেখিতে পাই।

এই ঔষধ ঘৰ্ম্ম উৎপাদন করে, প্রচুর অবসন্নকর ঘর্ম্ম, নিশা-ঘৰ্ম্ম, যেমনটি আমরা দীর্ঘকালস্থায়ী রোগসমূহে দেখিতে পাই। সামান্য শ্রমেই ঘৰ্ম্ম। যদি সে সামান্য বেশী মাত্রায় উত্তপ্ত হয়, তাহা হইলে সে ঘৰ্ম্মে সিদ্ধ হইতে থাকে এবং তারপর সর্দি লাগে।

চৰ্ম্ম ক্ষতযুক্ত হয়, উহাতে আঁচিল, কড়া, কুগঠিত নখ, কর্কশ চুল উৎপত্তির প্রবণতা থাকে। নখের নীচে কঠিন, শৃঙ্গবৎ মাংসাঙ্কুর জন্মিতে থাকে এবং উহা অত্যন্ত বেদনাদায়ক হয়। আঙ্গুলের ডগা হইতে ছোট ছোট শিংয়ের মত মাংসাঙ্কুর বাহির হয়। সামান্য চাপে স্থান বিশেষ কড়া বা ক্ষত উৎপন্ন করে এবং মজুর শ্রেণীর লোকের পায়ের তলায় তোমরা চৰ্ম্মের অস্বাভাবিক পুরু হইয়া উঠার প্রবণতা দেখিতে পাইবে। হাঁটিতে গেলে ঐগুলিতে অত্যন্ত ব্যথা লাগে, কারণ ঐসকল কড়াযুক্ত স্থানে অত্যন্ত স্পর্শকাতরতা থাকে এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কড়ার মধ্যে অনেকগুলি কেন্দ্র থাকে। এই ঔষধে নুতন কিছু গড়িয়া তোলার, কঠিনতা সৃষ্টি করার প্রবণতা আছে। হাতের উপর আঁচিল জন্মে। চুলগুলি বিশ্রী। চর্মের উপর লালবর্ণ মন্ডলযুক্ত পুঁজবটি জন্মে। এইরূপ পুঁজবটির তলদেশটি প্রদাহিত হয় এবং উহা লালবর্ণ ও স্পর্শদ্বেষযুক্ত হয়।

এক্ষণে, তোমরা যদি এই ঔষধের পরীক্ষাটি পাঠ কর এবং উহার লক্ষণগুলি সংগ্রহ করিয়া ছবির মত সাজাইয়া রাখ, তাহা হইলে এন্টিম ক্রুড সম্বন্ধে তোমাদের সুস্পষ্ট জ্ঞান হইবে।

অপর নাম – অ্যান্টিমোনিয়াম সালফাইড (Antimonium sulphide),

এন্টিমনি (Antimoni),স্টি বনাইট (Stibnite)- Sb2S3,

এই খনিজ দ্রব্য সাধারণতঃ সীসা, তামা, লোহ ও হরিতালের সঙ্গে মিশে থাকে, তাই একে বিশুদ্ধ করে ঔষধের জন্য ব্যবহার করা হয়। এটিমনি ঔষার্ধে বিচূর্ণাকারে প্রস্তুত হয়ে থাকে।

সংক্ষেপে এন্টিম ক্রুড –

১। জিভের উপর দুধের মত সাদা পুরু ময়লা জমে।

২। অতিরিক্ত আহারে, বিশেষ করে চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহণে পাকস্থলীর গন্ডগোল

ও বমি বমি ভাবে।

৩। মখণ্ডলি এবড়ো খেবড়ো—আঁচিলের ন্যায় ফাটাফাটা ও শিঙের মত জন্মায়।

পায়ের তলায় কড়া ও পদ্মকাঁটা তাতে অত্যন্ত স্পর্শাদ্বেষ, হাঁটলে বেদনা ও কষ্টনুভব হয়।

৫। এন্টিম ক্রুডের জিহ্বা লক্ষণসহ বৃদ্ধদের পৰ্যায়ক্রমে কোষ্ঠবদ্ধতাও উদরাময়।

৬। শিশুরা কারো স্পর্শ ও দৃষ্টি সহ্য করতে পারে না, তাদের স্বভাব খিটখিটে

এবং তারা বদমেজাজী হয়।

৭। রাত্রিতে জ্বর জ্বর বোধ।

৮। মাথাবেদনা – বিশেষ করে নদীর জলে স্নান করলে, সর্দি লাগলে, সুরাপান করলে, পাকস্থলীর বিশৃঙ্খলা

বশতঃ টক, চর্বি ও ফলাহারে এবং উড়ে বসে যাওয়ায়।

৯। শ্লেমাস্রাবী অর্শে বিশেষ করে মলদ্বার থেকে রসের মত স্রাব বা রস

চুইয়ে পড়লে, অতে কাপড়ে হলদে দাগ পড়ে।

১০। সূর্য্যের তাপ সহ্য হয় না, রৌদে পরিশ্রম করলে কষ্ট বাড়ে, গরম আবহাওয়ায়

রোগী অবসন্ন হয়ে পড়ে।

এন্টিমক্রুড – একটি আলোচনা

১। আমরা আগে যে তিনটি (নাক্সভমিকা, পালসেটিলা ও ব্রায়োনিয়া) ঔষধের সম্বন্ধে আলোচনা করেছি তাদের মত অ্যান্টিম ক্রুডও পরিপাক নালীর সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্কযুক্ত।

এর প্রধান চরিত্রগত লক্ষণ-

দুধের মত সাদা পুরু ময়লার দ্বারা জিভ আবৃত।

অনেক ঔষধেই সাদা ময়লা পুরু জিভ দেখা যায়, কিন্তু তাদের মধ্যে এন্টিম ক্রুডই প্রধান। ইহা পাকস্থলী সম্বন্ধীয় রোগে ভাল কাজ করে। বিশেষ করে অতিরিক্ত আহারবশতঃ পাকস্থলীর যে সকল রোগ জন্মে, তাদের সঙ্গে অতিশয় গা বমি বমি, ও যন্ত্রণা থাকলে, বিশেষ করে জিভের উপর সাদা ময়লার প্রলেপ থাকলে পূর্বোক্ত তিনটি ঔষধের আগেই এই ঔষধটির কথা বিবেচনা করতে হবে। তবে পাকস্থলীর তরুণ বিশৃঙ্খলা অৰ্থাৎ পাকস্থলীর গন্ডগোলটি অল্প কয়েকদিনের হলে এন্টিম ক্রুড উপযোগী। পাকস্থলীতে খাদ্য একেবারে হজম না হলে, ভুক্তদ্রব্য ঢেকুরের সঙ্গে উঠলে, এবং রোগী যদি মনে করে যে বমি করলে তার শান্তি লাভ হবে তখন এন্টিমক্রুডের কয়েকটি বড়ি খেলেই বমি বন্ধ হয়ে যাবে এবং যন্ত্রণাও কমে যাবে।

২। গ্রীষ্মকালীন উদরাময়-

তবে আহারের দোষে, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালের উত্তাপে প্রায়ই উদরাময় দেখা দেয় এবং তখন মলের বিশেষ প্রকৃতি হল—মল আংশিক শক্ত ও আংশিক তরল। এ থেকে বুঝা যায় যে, সমগ্র অন্ননালীর কিছু অংশে হজম হচ্ছে আর কিছু অংশে হজম হচ্ছে না, এক্ষেত্রে এন্টিমক্রুড ব্যবহারে পরিপাক নালীর কাজ ঠিক হয়ে যায়।

গ্রীষ্মকালীন উদরাময়ে এন্টিমকুন্ড ও ব্রায়োনিয়া সমভাবে ব্যবহার করা যায়, এক্ষেত্রে অবশ্যই রোগীর লক্ষণ সমষ্টি দেখে ঔষধটি নির্ধারণ করে নিতে হয়। গ্রীষ্মকালে অবশ্য আর একরকমের উদরাময় দেখা যায়, বিশেষ করে বৃদ্ধদের মধ্যে কোষ্ঠবদ্ধতার সঙ্গে পৰ্য্যায়ক্রমে উদরাময় দেখতে পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে এন্টিম ক্রুডই একমাত্র ঔষধ।

তবে শ্লেষ্মাক্ষরিত অর্শে বিশেষ করে অবিরত শ্লেষ্মাক্ষরিত হয়ে কাপড়ে হলদে দাগ লাগলে এবং তাতে রোগী অতিশয় বিরক্ত বোধ করলে এন্টিম ক্রুডই -উৎকৃষ্ট ঔষধ।

৩। মানসিক লক্ষণ  

ক) সবিরাম জ্বরে অত্যন্ত বিষন্নতা ও শোকার্ত্ততা,

খ) আবার চন্দ্রালোকে আবেগ ও আনন্দময় প্রেমের ভাব,

গ) শিশু কারো স্পর্শ বা দৃষ্টিপাত সহ্য করতে পারেনা -এন্টিমক্রুডের বিশেষ

মানসিক লক্ষণ। এদের মধ্যে তৃতীয় লক্ষণটি রত্ন বিশেষ।

অনেক ক্ষেত্রেই পেট গরমের জ্বরে বা স্বল্প বিরাম জ্বরে এইসব মানসিক লক্ষণ দেখে এন্টিম ক্রুড দিয়ে বহু রোগীকে সুস্থ করা গেছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই শিশুর খিটখিটে স্বভাব থাকে বটে, কিন্তু সে ক্যামোমিলার মত কোলে চড়ে বেড়াতে চায় না, বরং তাকে যত্ন বা আদরকরলে সে কাঁদে ও চীৎকার করে। এইক্ষেত্রে অনেকস্থলে আবার দেখা যায় যে এই সকল রোগীর জ্বর রাত্রে বাড়ে এবং সেই সঙ্গে অত্যন্ত পিপাসা থাকে। জিভ থাকে সাদা ময়লায় ঢাকা। তবে এই সমস্ত শিশুর সুস্থ অবস্থাতেও নাসারন্ধ্রে, ও মুখের কোণে চিড়খেতে ও মামড়ি পড়তে দেখা যায়। (আর অসুস্থ হলেও এই লক্ষণ দেখা যায়।)

৪। ধাতুগত অবস্থা

যে সকল লোকের পক্ষে এন্টিমক্রুড উপযোগী তাদের ক্ষেত্রে এক বিশেষ ধাতুগত অবস্থা দেখা যায়। এদের হাতের আঙ্গুলের নখগুলি চেরা-চেরা হয়ে গজায়, আঁচিলের মত বা শিঙের মত শক্ত স্থান থাকে। তাছাড়া দৈবাৎ যদি কোন নখ আঘাত লেগে ভেঙ্গে যায় বা চিরে যায় তাহলে উহা আর স্বাভাবিক আকারে ফিরে আসে না, বিকৃত আকারে তৈরী হয়।

পার্থক্য-

সাইলিসিয়ার হাত ও পায়ের নখ গুলিও বিকৃত হয়, গ্রাফাইটিসের হাতের ও পায়ের নখগুলি— পুরু ও বিকৃত(cripled), থুজার- নখ ভঙ্গুর, দ্বিখন্ডিত ও বিকৃত। এন্টিমক্রুড়ের পায়ের নখ ভঙ্গুর, স্বাভাবিক ভাবে উৎপন্ন হয় না, কুচকে যায় বা একেবারেই বাড়ে না।

৫। পায়ের তলার কড়া ও স্পর্শাদ্বেষ-

পায়ের তলায় কড়া ও গায়ে পদ্মকাটা জন্মে। ঐগুলিতে অত্যন্ত স্পর্শাদ্বেষ থাকে আর ঐ স্পর্শাদ্বেষের ফলে রোগী ঠিক মত হাঁটতে পারে না।

তবে পায়ের তলায় এই স্পর্শাদ্বেষের লক্ষণ দেখে কয়েকটি খুব খারাপ পুরাতন বাতের রোগীকে আরোগ্য করা গেছে।

পার্থক্য-

পায়ের পাতায় ঘামের জন্য পায়ের তলায় ঘা হয় ব্যারাইটা কাৰ্ব্ব, পায়ের তলায় বেদনা ও স্পর্শকাতরতা বা স্পর্শাদ্বেষ পালসেটিলা, হাঁটার সময় গোড়ালি ও পায়ের তলায় স্পর্শাদ্বেষ- লিডাম হামাগুড়ি দিয়ে ছাড়া হাটতে পারে না- মেডোরিনাম, পায়ের ফোলা ও বেদনায় লাইকো উপযোগী।

৬। তবে চর্মের যেকোন স্থানে শিঙের মত উপমাংস জন্মালে এন্টিম ক্রুডের কথা মনে করবেন। এই ঔষধটি জীবনের প্রথম থেকে শেষ প্রান্ত অর্থাৎ শিশু থেকে বৃদ্ধদের পক্ষে উপযোগী।

৭। হ্রাসবৃদ্ধি-

ক) উত্তপে, বিশেষতঃ সূর্যের তাপে রোগের উৎপত্তিবা বৃদ্ধি জন্মে (ব্রায়োনিয়া, গ্লোনয়েন, জেলসিমিয়াম, নেট্রাম কার্ব)।

খ) গরমকালে রোগী অবসন্ন বোধ করে, গা বমিবমি ভাব, বমি ও উদরাময় প্রভৃতি পাকাশয়ের গন্ডগোল গরমকালে বাড়ে বা গরম কালে জন্মায়।

গ) গরমকালে কাশির বৃদ্ধি, বিশেষ করে ব্রায়োনিয়ার মত ঠান্ডা বায়ু থেকে গরম ঘরে প্রবেশ করলে এন্টিম ক্রুডের কাশি বাড়ে।

৮। এন্টিম ক্রুডে’র হ্রাসবৃদ্ধির বিশেষ লক্ষণগুলি হল—

ক) এটিম ক্রুডের রোগ যেহেতু সূর্য কিরণে ও আগুনের বিকীর্ণ উত্তাপে বাড়ে তাই এন্টিমক্রুড খ্রীষ্মকালের রোগের একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ।

খ) ঠান্ডা জলে স্নান করলে রোগ বাড়ে বা উৎপন্ন হয় (রাস টক্স, সালফার)।

গ) ঠান্ডা জলে গা ধোয়ানোর সময় বা স্নান কলে শিশু কাঁদে।

ঘ) ঠান্ডা জলে স্নান করলে মাথা বেদনা, মাথায় সর্দি, পাকস্থলীর প্রতিশ্যায়

বা গ্যাসট্রিক ক্যাটার, উদরাময়, ঋতুবোধ ও দাঁতে যন্ত্রণা আরম্ভ হয়।

তবে এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় যে-যদি কোন পুরাতন রোগী তাদের রোগের সূচনা, জলে সাঁতার কাটার পর বা জলে পড়ে যাওয়ার পর হয়েছে বলে উল্লেখকরেন, তাহলে ঐ রোগীর চিকিৎসার সময় প্রথমেই এন্টিম ক্রুডের কথা ভেবে দেখতে হবে। তবে ঐ সঙ্গে এন্টিম ক্রুডের অন্যান্য লক্ষণও ঐ রোগীতে আছে কিনা তার অনুসন্ধান করে দেখা একান্ত কর্তব্য। তবে এগুলি ছাড়া-

ক) অন্ত্র থেকে কঠিন মলের সঙ্গে প্রভূত রক্তস্রাব।

খ) চোখের পাতার পুরাতন আরক্ততা,

গ) ক্ষয়ে যাওয়া দাঁতের বেদনা রাত্রিতে বৃদ্ধি,

ঘ) টকদ্রব্য, অম্ল মদিরা, ভিনিগার প্রভৃতি খাওয়ার পর পাকস্থলীর

উপদ্রবেও এন্টিম ক্রুডই একমাত্র ঔষধ।

Ant-c : Antimonium Crudum
Irritable, peevish children who cannot bear to be touched or looked at.Sweet, romantic and sentimental, moved by moonlight.Soft, sensitive, emotional.

Moroseness and loathing of life after long illness or disappointment in love.

Aggravation from radiant heat (stove, open fire, heater, sun), cold bathing.

Thick, white coating of tongue, like a fur with gastric derangements.

Indigestion from dietary indiscretion, tendency to over eat.

Lumps, corns, warts, growths, callosities.


COMMON NAME:

Black sulphide of Antimony


A/F:

-Disappointed love.

-Too much river or cold bathing.

-Alcohol, wine, water, acids, fats, fruits.

-Deranged digestion, overeating.

-Suppressed eruptions.

-Overheating.

-Sunburn, extreme of heat and cold.


MODALITIES:

< Evening

< From heat

< Acid

< Washing

< Wet poltices

< Moon light

< Cold bathing

< Ascending stairs

< Touch

< After getting drunk

< Heat of summer, of sun

< Overeating

> Open air

> During rest

> Moist warmth

> Lying down


MIND:

-Bad effects of disappointed love.

-Great anxiety about his fate, inclination to shoot himself.

-Fretful, cross and peevish.

-Cries, if looked at, or touched, or washed, especially in children.

-Adults are sulky, do not wish to speak with anyone.

-Loathing; of life of food, bathing, etc.

-Ecstasy and exalted love. Excitability.

-Dreamy, sentimental mood in the moonlight and twilight, during diarrhoea, before menses.

-Angry at every little attention.

-Love sick, taciturn.

-So busy with oneself, one forgets to urinate or defecate, eats only when asked.

-Talks in rhymes and verses.

-Nervous, hysterical girls and women, who are overcome by mellow light from stained glass windows.

-Cross and contradictive, whatever is done fails to give satisfaction.

-Nymphomania during suppressed menses.

-Great sadness with weeping.

-Anxious lachrymose mood, the slightest thing affects her, abject despair, suicide by drowning.

-Patient is always sleepy and weary.


GUIDING INDICATIONS:

-Nervous symptoms, such as restlessness, twitches in the muscle and disposition to start on slightest sound are also found.

-It is suitable to infants and children; also to elderly persons and young person who have a tendency to grow fat, for the extremes of life.

-There is a tendency to formation of cracks – in canthi, nostrils, angles of the mouth.

-It produces strange absence of pain, where it should be expected, e.g. bedsores.

-When the symptoms group recur, they change their locality or go from one side to other; they recur every five, six or twelve weeks.

-It produces lumpy effects-stools are watery containing lumps,

-leucorrhoea is watery mixed with lumps,

-lumps appear upon the skin,

-nails become thick, distorted and lumpy.

-Eats beyond the capacity of his digestion or without discrimination, therefore the mental and skin symptoms are due to gastrointestinal disturbances.

-Aversion to cold bathing, child cries when washed.

-All conditions are < heat and cold.

Worse in warm weather and from heat < radiant heat.

-Always weary and sleepy.

-Head-Aching in vertex on ascending, from bathing, from disordered stomach, especially from eating candy or drinking acid wines.

-Heaviness in forehead with vertigo, nausea and nosebleed.

-Eyes-Dull, sunken, red, itch, inflamed, agglutinated canthi, raw and fissured.

-Chronic blephritis.

-Pustules on cornea and lids.

-Face-Pimple, pustules, boils on face.

-Yellow crusted eruption on cheeks and chin.

-Cracks in corner of mouth.

-Mouth-Tongue coated thick white as it white washed.

-Cancer of mouth.

-Saltish salivation. Taste bitter.

-Toothache in hollow teeth. Toothache before menses.

-G.I.T.-Loss of appetite.

-Desire for acids, pickles, wine, vinegar, cucumber.

-Eructation tasting of the ingesta.

-Gastric and intestinal complaints from bread, pastry, acids, vinegar, sour wine, cold bathing, overheating, hot weather.

-Constant belching.

-Bloating after eating. Sweetish waterbrash.

-Child vomits its milk in curdled form after nursing and refuses to nurse afterwards.

-Stomach seems to be always overloaded.

-Digestion disordered easily.

-Appetite does not return after severe illness.

-Constant discharge of flatus, up and down for years.

-Old people with morning diarrhoea, suddenly become constipated, or alternate diarrhoea and constipation.

-Stools of hard lumps mixed with watery discharge. Catarrhal proctitis.

-Diarrhoea after acids, sour, wines, bathing, overeating, slimy, flatulent, slow.

-Mucous piles, continued oozing of mucus.

-Respiratory system-Looking into the fire cause cough.

-Nostrils chapped and covered with crusts.

-Eczema of nostrils, sore, cracked and scurfy.

-Much thick, yellowish mucus from posterior nares.

-Rough voice, from over use.

-Hoarseness after cold water bath.

-Loss of voice, harsh and badly pitched voice.

-Loss of voice after being overheated.

-Cough worse, coming into warm room, with burning and itching of chest.

-Whooping cough < overheated, from cold washing.

-Extremities-Disposition to abnormal growths of the skin of fingers.

-Nails do not grow rapidly; crushed nails grow in split like warts, with horny spots.

-Nails grow out of shape. Nails brittle. Growth beneath nails.

-Horny warts on hands and soles.

-Large horny corns on soles of feet; very sensitive while walking, especially on stone pavements.

-Inflamed corns.

-Arthritic pain in finger.

-Weakness and shaking of hands while writing, followed by offensive flatus.

-Skin-Eczema with gastric derangements.

-Eruptive tendency of pimples, vesicles and pustules.

-Urticaria, measles like eruption.

-Itching when warm in bed.

-Dry gangrene.

-Chicken pox.

-Impetigo.


KEYNOTES:

1. Sentimental mood in the moonlight.

2. Thick, milky white coating of tongue.

3. Loss of voice from becoming overheated.


NUCLEUS OF REMEDY:

-The mental and gastric symptoms determine this remedy.

-Eats beyond the capacity of his digestion or without discrimination, therefore the mental and skin symptoms are due to gastro intestinal disturbances.

-Aversion to cold bathing, child cries when washed.

-Aggravated from heat and cold bathing.

-Disposition to abnormal growths of the skin.

-Nails grow slowly, grow out of shape. Nails brittle.


CONFIRMATORY SYMPTOMS:

1. For the people who have a tendency to grow at, for the extremes of life.

2. Aversion to cold bathing.

3. Excessive irritability and fretfulness, together, with a thickly coated, milky white tongue.

4. Craves acids, pickles, cucumbers.

5. Warts on hands and soles.

6. Horny corns on soles of feet, very sensitive while walking.

7. Stools composed entirely of mucus.

8. Nails grow slowly, grow out of shape, and are brittle.

9. Loss of voice from becoming overheated.


CLINICAL:

-Arthritis, Callosities, Chicken pox, Chronic fatigue syndrome, Depression, Diarrhoea, Gastritis, Glossitis, Headache, Impetigo, Menopausal complaints, Obesity, Peptic ulcer.

-Ant-crud 30 or 200 is almost specific for impetigo- Dr. Foubister and Dr. Borland.

-In the diarrhoea, often of old people, which alternates with constipation, Ant-c is the only remedy- Dr. Tyler.

-Arthritis deformans responds to Ant-c, a near specific- Dr. Shwatartz.


REMEDY RELATIONSHIPS:

Complementary : Squil.

Followed Well By : Merc, Puls, Sulph.

Follows Well : Ip, Puls.

Compare : Acon, Am-m, Apis, Ars, Bry, Carb-v, Cham, Euphr, Ferr, Hep, Ip, Lyc, Merc, Nux-v, Puls, Ran-b, Rhus-t, Squil, Sulph.

Antidoted By : Bry, Calc, Hep, Merc.

Duration Of Action : 40 Days.


About The Author

D.H.M.S (Dhaka), M.M (BMEB) Consultant Homoeopathic physician Researcher, books author and speaker Owner of HD Homeo Sadan  CEO of HD Health Lecturer: Ashulia Homeopathic Medical College

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *