শ্বাসকষ্ট ও পাকস্থলীর অসুস্থতার সহিত প্রচন্ড বমি, বমি ভাব ও অবসাদ। |
তামাকের গন্ধ সহ্য করতে পারেনা যদিও তামাক সেবনের প্রতি আসক্তি। |
পেটে ক্ষুধা লাগার সহিত মুখ থেকে লালা নিঃসরণ হয়। |
নাড়ী দূর্বল, লোবেলিয়ার অধিকাংশ অসুস্থতার শেষের দিকে লক্ষনটি দেখতে পাওয়া যায়। |
কানের স্রাব বন্ধ হওয়ার পরে বধিরতা। |
এটি একটি ভেসো-মোটর স্নায়ু উত্তেজক ঔষধ; সমগ্র শরীরের কাজকে সতেজ করে এই ঔষধ; এই ঔষধটি মূলতঃ নিউমোগ্যাসট্রিক স্নায়ুর উপর কাজ করে, যার ফলে একজাতীয় অবসাদ ও শিথিল অবস্থা উৎপন্ন হয় তৎসহ বুকে ও পেটের উপরের অংশে চাপবোধ। বাধাপ্রাপ্ত শ্বাস-প্রশ্বাস, বমি বমিভাব ও বমিজাতীয় লক্ষণের উদ্ভব হয়। অবসাদ, পেশীসমূহের শিথিলতা, বমিবমিভাব বমি ও অজীর্ণ হল এই ঔষধের সাধারন নির্দেশক লক্ষনাবলী যে ক্ষেত্রে ঔষধটি ব্যবহার হবে। হাঁপানী ও পাকাশয়িক উপসর্গ সমূহ। খুব ভালো কাজ করে হাল্কা রঙযুক্ত স্থূলকায় ব্যক্তির উপরে। মদ পানের কুফল সমূহ। স্রাব সমূহের চাপাপড়া। (সালফার)। ডিফথিরিয়া। প্রদাহিত জন্ডিস (সিয়োন্যান্থাস)।
মাথা — মাথাঘোরা ও মৃত্যু ভয়। পাকাশয়িক গোলযোগ হেতু মাথার বেদনা, তৎসহ বমি-বমিভাব, বমি এবং প্রচন্ড দুর্বলতা; বিকালের দিক থেকে মধ্য রাত্রি পর্যন্ত বৃদ্ধি; তামাকে বৃদ্ধি। মৃদু ও ভারযুক্ত বেদনা।
মুখমন্ডল – ঠান্ডা ঘামে ভিজে যায়। হঠাৎ করে ফ্যাকাসে বর্ণ।
কান — স্রাব চাপা পড়ার ফলে বধিরতা অথবা একজিমা। গলা থেকে তীরবিদ্ধবৎ বেদনা।
মুখগহ্বর – প্রচুর লালাস্রাব; হাজাকর, জ্বালাকর আস্বাদ; পারদের মত আস্বাদ; চটচটে শ্লেম্মা, জিহ্বা সাদা লেপ যুক্ত।
পাকস্থলী – অম্ল, পেটফাঁপা, আহারের পরে ছোট ছোট শ্বাস-প্রশ্বাস। গলা বুক জ্বালা তৎসহ প্রচুর লালাস্রাব। তীব্র বমিবমিভাব ও বমি। সকালের দিকে বমি-বমিভাব। পেটের উপরের অংশে শূন্যতাবোধ ও দুর্বলতা। প্রচুর লালাস্রাব তৎসহ ভালো ক্ষুধা। প্রচুর ঘাম ও অবসন্নতা। কিছুতেই তামাকের গন্ধ বা আস্বাদ সহ্য হয় না। হাজাকর, জ্বালাকর আস্বাদ; অম্ল, তৎসহ পাকস্থলীর উপরের অংশে সঙ্কোচনের অনুভূতি। পেটে বায়ুসঞ্চয়, আহারের পরে ছোট ছোট শ্বাস-প্রশ্বাস। গলাবুক জ্বালা।
শ্বাস-প্রশ্বাস যন্ত্রসমূহ – বুকের সঙ্কোচন থেকে শ্বাসকষ্ট; যে কোন প্রকার পরিশ্রমে বৃদ্ধি। বুকের ভিতরে চাপবোধের অথবা ভারীবোধের অনুভূতি; দ্রুত চলাফেরায় উপশম। মনে হয় হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাবে। হাঁপানী, আক্রমন তৎসহ দুর্বলতার অনুভূতি পাকস্থলীর উপরের অংশে এবং আক্রমনের আগে সারা শরীরে খোঁচা মারার মত অনুভূতি। খিলধরা, খন্থনে শব্দযুক্ত কাশি, ছোট-ছোট শ্বাস-প্রশ্বাস, গলার ভিতরে কিছু আটকিয়ে থাকার মত অনুভূতি। বার্ধক্যজনিত এমফাইসিমা।
পিঠ — ত্রিকাস্থি স্থানে বেদনা; সামান্য স্পর্শ সহ্য করতে পারে না। সামনের দিকে ঝুঁকে বসে।
প্রস্রাবযন্ত্রসমূহ — গাঢ় লালবর্ণযুক্ত এবং প্রচুর লাল তলানিযুক্ত প্রস্রাব।
চামড়া — খোঁচামারার মত অনুভূতি, চুলকানি তৎসহ তীব্র বমিবমিভাব।
কমা-বাড়া-বৃদ্ধি, তামাকে, বিকালে, সামান্য নড়াচড়ায়, ঠান্ডা, বিশেষ করে ঠান্ডা জলে ধুলে।
উপশম – দ্রুত চলাফেরায়; (বুকের বেদনা), সন্ধ্যার দিকে এবং গরমে।
সম্বন্ধ-দোষঘ্ন – ইপিকাক।
তুলনীয় – টাবেকাম; আর্সেনিক, এন্টিমটার্ট; ভিরেট্রাম; রোজা।
লোবেলিয়া সিফিলিটিকা (হাঁচি যুক্ত ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি পরিষ্কার ছবি এই ঔষধে পাওয়া যায়, নাকের পিছনের অংশ, তালু এবং গলকোষ আক্রান্ত হয়। অত্যন্ত অবসাদগ্রস্ত। চোখের উপরে কপাল অংশে বেদনা। অন্ত্রে বেদনা ও বায়ুসঞ্চয়, এর পরে প্রচুর পরিমানে জলের মত মল তৎসহ কোঁথ ও মলদ্বারে টাটানি ব্যথা। হাঁটুদ্বয়ে বেদনা। পায়ের তলায় খোঁচামারার মত অনুভূতি।বুকের নিম্নাংশে প্রচন্ড চাপবোধ; যেন ঐ অংশে বাতাস পৌঁছাতে পারছে না এই জাতীয় অনুভূতি। বুকের বামদিকের ছোট পজ্ঞরাস্থি স্থানে বেদনা। শুষ্ক, খুকখুকে কাশি, কষ্টকর শ্বাস-প্রশ্বাস। নাকের গোড়ায় মৃদু, কঙ্কনানী বেদনা। কর্ণনলীর প্রদাহ। প্লীহার পিছনের অংশে বেদনা)।
লোবেলিয়া ঈরিনাস — ম্যালিগন্যান্ট গ্রোথ, অত্যন্ত দ্রুত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত, ও মেন্টামের ক্যান্সার, পেটে স্ক্রু ঢোকাবার মত বেদনা; চামড়া, নাসিকা ও মুখগহ্বরের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর তীব্র শুষ্কতা; হাতের তর্জনীর অগ্রভাগ একজিমার মত ছোপে ঢাকা থাকে। মুখমন্ডলের ম্যালিগন্যান্ট জাতীয় রোগসমূহ। এপিথিলিয়েমা।
শক্তি — অরিষ্ট থেকে ৩০ শক্তি। বাহ্যিকভাবে এই ঔষধ পয়জওকের ক্রিয়ানাশক। প্রায়ই এই ক্ষেত্রে অ্যাসিটাম লোবেলিয়া; অন্যান্য প্রকার লোবেলিয়া থেকে ভালো কাজ করে। লোবেলিয়া চামড়ার নীচে ব্যবহার করা হলে, তা ডিথিরিয়া রোগের বিষক্রিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে এবং শরীরকে শক্তিশালী করে তোলে, এই জাতীয় সংক্রমন ভবিষ্যতে প্রতিহত করার জন্যে।(ডব্লিউ, ইলিং উড)।
অপর নাম – ইণ্ডিয়ান টোবাকো (Indian tobacco)
ইহা লোবেলিয়েসী জাতীয় একপ্রকার বৃক্ষ। এর সব গাছ থেকে মূল অরিষ্ট তৈরী হয়।
* পেশী মণ্ডলীর অতিশয় শিথিলতা, প্রভূত লালা সঞ্চয় সহকারে বিবমিষা কমন।