ক্রনিক রোগকে মূল থেকে সম্পূর্ণ আরোগ্য করার জন্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিন।
আমাদের সফল চিকিৎসার ভিডিও প্রমাণসমূহ দেখুন –
সফল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পেতে হলে জানতে হবে।
আপনারা অনেকেই জানেন, চিকিৎসা ২ প্রকার:
- ১) চিকিৎসা করে রোগকে কিছুদিনের জন্য থামিয়ে দেয়া।
- ২) চিকিৎসা করে রোগকে মৌলিক ভাবে সম্পূর্ণ রূপে আরোগ্য করা।
হোমিওপ্যাথি রোগকে মৌলিক ভাবে সম্পূর্ণ রূপে আরোগ্য করে, কথাটি আজ বিশ্বে প্রমাণিত ও স্বীকৃত।
প্রশ্নোত্তর:
১) প্রশ্ন: হোমিওপ্যাথি কি দ্রুত কাজ করে না আস্তে আস্তে কাজ করে ?
উত্তর: একেক রোগের একেক পরিসংখ্যান। যেমন ক) একুইট রোগ। খ) ক্রনিক রোগ। গ) সার্জিক্যাল রোগ। ঘ) আঘাত জনিত রোগ। ঙ) দুরারোগ্য রোগ। এদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তাই প্রত্যেকের স্বতন্ত্র আলোচনা করা হলো।
- ক) একুইট রোগ: একুইট রোগ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আবির্ভূত হয়। এ সময়ের মধ্যে রোগীকে মারে, না হয় রোগ মরে। যেমন হঠাত আক্রান্ত জ্বর, ডাইরিয়া, বসন্ত ইত্যাদি। এ এসমস্ত রোগে আক্রান্ত রোগীকে আরাম দেয়াই ডাক্তারের প্রথম কাজ। প্রায় সর্বপ্রকার প্যাথিতে এর ভালো চিকিৎসা আছে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় দ্রুত ভালো হয় ও এর কোন কুফল বর্তমান থাকেনা।
- খ) ক্রনিক রোগ: প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় যে রোগের জন্য ঔষধ সেবন করা অবস্থায়, রোগী আরাম পায় কিন্তু ঔষধ সেবন না করলে রোগী অসুস্থ থাকে, তাকে ক্রনিক রোগ বলে। যেমন বাত জ্বর, গেটে বাত, সায়েটিকা বাত, পুরাতন মাথা ব্যথা, একজিমা ইত্যাদি।
এরূপ ক্রনিক রোগে আক্রান্ত ১০ জন রোগী হোমিওপ্যাথিতে চিকিৎসা নিলে ৬ থেকে ৮ জন রোগী মৌলিক ভাবে সম্পূর্ণ রূপে আরোগ্য হয়। এবং ডায়াবেটিস, হাই প্রেশার, সোরিয়েসিস এর মতো অতি জটিল রোগের জন্য ১০ জন রোগী চিকিৎসা নিলে ৩ থেকে ৫ জন রোগী মৌলিক ভাবে সম্পূর্ণ রূপে আরোগ্য হয়। এবং তার কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকেনা।
উল্লেখ্য যে, ১০ বৎসর ধরে ভোগতে থাকা একটি ক্রনিক রোগ, হোমিওপ্যাথিতে মৌলিক ভাবে সম্পূর্ণ রূপে আরোগ্য করতে, ১ থেকে ১.৫ বৎসর সময় লাগা যুক্তি সঙ্গত ও বিজ্ঞান সম্মত। যা অন্যরা রোগীকে আরাম দিতে পারে, রোগ লালন করতে পারে কিন্তু সুস্থ করতে পারেনা।
তাই বলব হোমিওপ্যাথি ক্রনিক রোগকে সম্পূর্ণ আরোগ্য করে, অন্যরা আরাম দেয় কিন্তু সারাজীবন লালন করে।
- গ) সার্জিক্যাল রোগ: আমরা হোমিওপ্যাথরা বলি অপারেশন মানেই ব্যর্থতা। যেমন প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় টিউমার, অর্শ, আঁচিল, এপেন্ডিসাইটিস, পিত্ত পাথর, কিডনি পাথর, অগ্নাশয়ে পাথর ইত্যাদি রোগ সমূহ চিকিৎসা করে সুস্থ করতে পারে না বিধায় অপারেশন করে ফেলে দেয়। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় অপারেশন করার পরে রোগী সে রোগে আবার আক্রান্ত হয় অথবা নতুন জটিলতা তৈরি হয়, এমনকি ক্যান্সার হতেও দেখা যায়।
এরূপ সার্জিক্যাল রোগে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগী অপারেশন ছাড়াই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়। এবং তার সামান্য কুফল বা দাগও বর্তমান থাকেনা। তবে যারা চিকিৎসায় সুস্থ হয়না তাদের বাধ্য হয়ে অপারেশন করার পক্ষে হোমিওপ্যাথি।
- ঘ) আঘাত জনিত রোগ: আঘাত জনিত রোগের সবচেয়ে সফল চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি। যেমন কেউ এক্সিডেন্ট হয়ে বা ডাব গাছ থেকে মাথায় ডাব পরে, প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে কোমায় চলে গেছে, এমতাবস্থায় এ রোগীকে সবচেয়ে ভালো সাহায্য করতে পারবে হোমিওপ্যাথি। যা অন্যরা কোটি টাকা খরচ করেও পারবেনা।
- ঙ) দুরারোগ্য রোগ: যেমন ক্যান্সার, বার্ধক্য জনিত রোগ ইত্যাদি। এ ধরনের রোগ সম্পূর্ণ ভালো করা দুরূহ। তবে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করে অনেকদিন ভালো রাখা যায়। একটা সময় আসে যখন তাদের ক্যামিক্যল বা যান্ত্রিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য হাসপাতালে পাঠাতে হয়।
সফল রোগীর ভিডিও প্রমাণ
২) প্রশ্ন: শুনেছি হোমিওপ্যাথি খেলে প্রথমে রোগ বৃদ্ধি হয়। তার কারণ কি ?
উত্তর: হোমিওপ্যাথিকে তার নিজস্ব দৃষ্টি ভঙ্গিতে বুঝতে হবে, কারণ হোমিওপ্যাথি রোগকে মৌলিক ভাবে ভালো করে। যেমন উদাহরণ সরূপ ১০০০ লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি পানির টাঙ্কিতে দিনে একবার পানি পূর্ণ করলে একটা ফেমেলির পানির চাহিদা পূর্ণ হয়। যে কোন কাড়নে তার তলায় ছিদ্র হয়েছে এবং তা দিয়ে ২০০ লিটার পানি প্রতিদিন বের হয়ে যায়।
- প্রচলিত চিকিৎসা ব্যাবস্থায়ঃ প্রতিদিন আলাদা ২০০ লিটার পানি (ঔষধের মাধ্যমে) দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এর ফলে যতদিন অতিরিক্ত পানি দেয়া হবে ততদিন রোগী আরাম বোধ করবে, ধীরে ধীরে ছিদ্রের পরিমাণ বড় হবে এবং পানি দেয়ার পরিমাণও বাড়াতে হবে। যে পানি অতিরিক্ত পড়ে যাচ্ছে তার সাইড ইফেক্টে নতুন করে অনেক গুলো সমস্যা (রোগ) তৈরি হবে। এবং তাদের আলাদা নাম দিয়ে আলাদা ডাক্তারের নিকট প্রেরণ করা হবে।
- হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ব্যাবস্থায়ঃ ঔষধ দিয়ে রোগ শক্তিকে দুর্বল করা হবে এবং জীবনী শক্তিকে উজ্জীবিত করা হবে। জীবনী শক্তি উজ্জীবিত হলে তার ইঞ্জিনিয়ারিং টিম টাংকির ছিদ্রের স্থানে যাবে এবং আস্তে আস্তে রিপিয়ার করবে। রিপিয়ার করার প্রাথমিক অবস্থায় বা কিছুদিন পড়ে পড়ে রোগ যন্ত্রণা ২/৪ দিনের জন্য বাড়তে পারে, তবে প্রথম বৃদ্ধি হতে পরবর্তী বৃদ্ধি কম হবে। এবং প্রতিদিন ২০০ লিটার পানি না ভরেও যেন রোগী সংযমের সহিত চলতে পারে তার ব্যবস্থা জীবনী শক্তি করবে। কারণ বর্তমানে রোগ শক্তি থেকে জীবনী শক্তি বেশি ক্ষমতাধর।
৩) প্রশ্ন: অনেক রোগী আছে যারা চিকিৎসা পূর্ণ না করে চলে যায়, তার কারণ কি?
উত্তর: এর বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। যেমন-
- রোগী কিছুটা আরাম পেলে: ভালো হয়েছি মনেকরে বা অলসতার কারণে বা আর্থিক কারণে আর আসেনা। এতেকরে রোগটি থেকে যায় এবং পরবর্তীতে আবারো ঐ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমনকি পূর্ব থেকে আরো তীব্র হতে পারে।
- রোগ বৃদ্ধি হলে: আরোগ্য নীতির কারণে রোগ বৃদ্ধি হলে রোগী ভুল বুঝে আর আসেনা। রোগী মনে করে ঔষধ খেলে রোগ কমবে কিন্তু বাড়বে কেন? (কেন বৃদ্ধি হয় তার উত্তর ২ নং প্রশ্নের উত্তরে দেয়া আছে)
আমার একটি অভিজ্ঞতা বলি। এক যুবকের হাতে, ৩ মাস ধরে আক্রান্ত একজিমার মতো চর্ম রোগ নিয়ে আমার নিকট চিকিৎসার জন্য আসে। আমি তাকে ঔষধ দেয়ার প্রায় ৬ মাস পড়ে ঐ রোগীর সাথে আমার দেখা হয় এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, তোমার চর্ম রোগের কি অবস্থা। ছেলেটি বলল আপনার ঔষধ খেয়ে আমার চর্ম রোগ অনেক বেরে ছিল, আমি গ্রামে চলে যাই। গ্রামের ইমাম সাহেবকে দেখালে তিনি ২ দিন সকালে ফু দিয়ে দেন, তার পর আস্তে আস্তে সব ভালো হয়ে যায়।
আমার বিশ্বাস এ রোগীটি ফু দ্বারা নয় ঔষধ দ্বারাই ভালো হয়েছে। এমনি করে হোমিওপ্যাথি সাফল্যের বহু কৃতিত্ব অন্যরা নেয়। এমনও দেখা যায় ৫ বৎসর যাবত প্রচলিত চিকিৎসা নিয়ে অধর্য্য হয়ে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিতে আসে। হোমিও চিকিৎসায় তার রোগ কষ্ট বেরে গেলে অনাস্থার কারণে আবারো প্রচলিত চিকিৎসায় ফিরে যায়। এবং রোগী তখন সুস্থ হয়। এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব হোমিওপ্যাথির, কারণ যে প্যাথি ৫ বৎসরে পারেনাই সে প্যাথি এখন পাড়ার কথানা। হোমিওপ্যাথি তার রোগ শক্তিকে দুর্বল করেছে এবং জীবনী শক্তিকে উজ্জীবিত করেছে। জীবনী শক্তি তার নিজস্ব শক্তিতে এ রোগকে ভালো করেছে।
- ফলাফল পেতে বিলম্ব হলেঃ কিছু কিছু রোগীর চিকিৎসায় ফলাফল আসতে ৩/৪ সাপ্তাহ বিলম্ব হতে পারে, অথবা রোগ কিছুটা কমে ২/৩ মাস একই ভাবে অবস্থান করতে পারে। এতে অধৈর্য হয়ে রোগী আর আসেনা। তবে কারো রোগের চিকিৎসায় যদি ৫/৬ সাপ্তাহেও ফলাফল আসতে শুরু না করে, তাহলে এ ডাক্তারের নিকট সময় ও অর্থ নষ্ট না করাই ভালো।
- অন্যের প্ররোচনায়: রোগী চিকিৎসা নিয়ে যাওয়ার পড়ে অনেক ক্যুবুদ্ধি দাতার প্ররোচনায় রোগীর আস্থা নষ্ট হয়।